পার্বত্য পাড়া কেন্দ্র প্রকল্প

মেয়াদ শেষ হলেও বেতন পাননি শিক্ষকরা

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:৫৫

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক টেকসই সামাজিক সেবা প্রকল্পের পাড়া কেন্দ্র শিক্ষকদের ৩ মাস যাবৎ বেতন বন্ধ। সম্মানি না পেয়েও শিক্ষকরা কার্যক্রম চালু রেখেছেন। প্রকল্পের আওতায় তিন পার্বত্য জেলায় পরিচালিত হয়ে আসছে ৪ হাজার ৮০০টি পাড়া কেন্দ্র। যার মধ্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলাতে রয়েছে ১৫০টি পাড়া কেন্দ্র।

কেন্দ্রগুলো দুর্গম অঞ্চলের শিশুদের বিকাশ ও প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে আসছে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের মাতৃস্বাস্থ্য, পুষ্টি উন্নয়ন, নিরাপদ পানি সরবরাহ, সংক্রমক ব্যাধি, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম ও নির্যাতন প্রতিরোধ, কিশোর-কিশোরী সহায়ক কার্যক্রমসহ সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় করছে। ২০২৩ সালের ৩০ জুন এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। যার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কর্মরত পাড়াকর্মীদের ৩ মাস যাবৎ সম্মানি বন্ধ হয়ে যায়। সম্মানি বন্ধ থাকলেও পাড়াকর্মীরা পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে কখন থেকে আবার প্রজেক্ট নতুন করে চালু হবে এবং সম্মানি ভাতা দেয়া শুরু হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পাড়া কর্মীরা।

৩ মাস সম্মানি ভাতা বন্ধ থাকার ফলে সীমাহীন আর্থিক সংকটে দিন কাটছে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ১৫০টি পাড়াকেন্দ্রের ১৫০ জন পাড়াকর্মীর পরিবারের।

এ বিষয়ে কাপ্তাইয়ের ওয়াগগা ইউনিয়ন নোয়াপাড়া পাড়াকেন্দ্রের কর্মী সুইক্রাইং মারমা জানান, আমি ১৯৯৯ সাল থেকে পাড়াকর্মীর দায়িত্ব পালন করে আসছি। এবং এই পাড়াকেন্দ্র থেকে মাসিক ৭ হাজার টাকা সম্মানি দিয়ে আমার সংসার খরচ চলে। তবে তিনমাস সম্মানি বন্ধ থাকার ফলে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এতকিছুর পরও পাওয়ার আশায়  পাড়াকেন্দ্রের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। অন্যদিকে কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন মিতিঙ্গাছড়ি পাড়াকর্মী স্বপ্না মারমা জানান,  ৩ মাস সম্মানি না পাওয়ার কারণে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধার-দেনা করে কোনমতে সংসার চালাচ্ছেন। দ্রুত সময়ে সম্মানি ভাতা চালু না হলে সংসারের সমস্যা আরো বাড়বে। 

এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলার সহকারী প্রকল্প ব্যবস্থাপক চিংসাঅং মারমা জানান, প্রতিদিন যখন আমরা বিভিন্ন পাড়াকেন্দ্রে পরিদর্শনে যাই তখন পাড়াকর্মীরা অসহায় মুখ নিয়ে আমাদের জিজ্ঞেস করে কখন সম্মানিভাতা পাবো। তখন আসলে খুব কষ্ট হয় উনাদের দেখে। আমরা তাদের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছি দ্রুত সময়ে এই সমস্যা সমাধান হবে। পাশাপাশি পাড়াকর্মীরা কিন্তু বিনা সম্মানিতে এখনো পাড়াকেন্দ্র চালিয়ে যাচ্ছে যেন মাঝপথে শিশুরা শিক্ষা অর্জনে ঝরে না পড়ে। আমরাও সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।

এদিকে টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের কাপ্তাই উপজেলা প্রকল্প ব্যবস্থাপক মৃদুল চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শীঘ্রই এটি অনুমোদন হবে। এবং অনুমোদনের পর পাড়াকর্মী এবং মাঠ সংগঠকসহ সকলে আবারো নিয়মিত সম্মানি ভাতা পাবেন। কাপ্তাই উপজেলার ১৫০টি পাড়া কেন্দ্রে দুই হাজারেরও অধিক শিশু প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করে যাচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৬ সেপ্টেম্বর/ইএইচ)