শ্রমিক বিক্ষোভে গাজীপুরে শতাধিক পোশাক কারখানা বন্ধ

প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৪৫ | আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৫৩

সাইফুল্লাহ আমান, ঢাকাটাইমস

পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর দাবিতে কয়েকদিন ধরে চলা বিক্ষোভের মুখে গাজীপুরে পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ রাখছে কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত ঠিক কতটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তার সঠিক কোনো তথ্য দেয়নি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। তবে শিল্প পুলিশের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত ১০০টিরও অধিক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছেন মালিকরা।

ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলে আসা শ্রমিক বিক্ষোভ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের সব জায়গায়। গাজীপুর গার্মেন্টস শিল্পের অন্যতম স্থান। এ জেলায় ৩ হাজারেরও বেশি ছোট-বড় গার্মেন্টস রয়েছে বলে জানায় বিজিএমইএর একটি সূত্র। আন্দোলনের অবস্থা বিবেচনা করে বিজিএমইএ সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানায় সূত্রটি। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান সার্বিক পরিস্থিতি বর্ণনা করবেন বলেও জানা গেছে।

তবে বিজিএমইএ গার্মেন্টস বন্ধের তথ্য নিশ্চিত করলেও কতগুলো কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তা জানায়নি। এ বিষয়ে কেউ অফিসিয়ালি কথা বলতেও রাজি হননি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শীর্ষ নেতা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘অবরোধের ঘোষণায় ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। কেউ কেউ আছেন বিএনপি নেতা। তারাও ফ্যাক্টরি তাদের পলিসির কারণে বন্ধ রাখতে পারেন। আবার শ্রমিক অসন্তোষে বন্ধ করেছেন এটাও অস্বীকার করা যাবে না। আমরা সঠিক তথ্য জেনে অফিসিয়ালি জানাব আপনাদের।’

গাজীপুরের বিভিন্ন কারখানার তথ্য মতে, আজ শ্রমিকরা কাজে গেলে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখতে পান। অবরোধের মধ্যেও হেঁটে কষ্ট করে এবং অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে কারখানায় এসে বন্ধের নোটিস দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রমিকরা। 

তাজমিন গার্মেন্টসের সুইং অপারেটর মোর্শেদ আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আজ ফ্যাক্টরি বন্ধ করবে মালিকরা তা আগে জানালে কী হতো? আমার বাসা থেকে ফ্যাক্টরিতে আসতে লাগে ১৫ টাকা অটো ভাড়া। আজ সেখানে আমার লাগল ৫০ টাকা রিকশা ভাড়া। এখানে এসে দেখি বন্ধের নোটিশ। মালিকরা তাদের ইচ্ছামতো আমাদের ব্যবহার করেন। শোষণ করেন। বেতনও দেন না চাহিদা মতো। কাজ কিন্তু ঠিকই করিয়ে নেন। বছর শেষে তাদের ফ্যাক্টরি একটা থেকে তিনটা হয়ে যায়। বেতন বাড়ানোর কথা বললে বলেন লসে আছে। লসে থাকলে ফ্যাক্টরি বাড়ে কীভাবে?’

এর আগে গতকাল সোমবার গাজীপুরে এক পোশাক শ্রমিক পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ২৬ বছর বয়সী রাসেল হাওলাদার নামের এ শ্রমিক ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেডের শ্রমিক ছিলেন। এ ঘটনায় পুলিশের একটি পিকআপে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে সিপিডি পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১৭ হাজার ৫৬৮ টাকা করার প্রস্তাব দেয়। শ্রমিক নেতারা ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম বেতনের দাবি জানায়। পোশাক কারখানা মালিকরা বর্তমান বেতনের সঙ্গে আরও ২ হাজার টাকা বাড়াতে চান। তবে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা বেতন দিতে প্রস্তাব করেন কোনো কোনো মালিক।

তবে এখনো বেতন বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান সংগঠন দুটির কর্তারা।

(ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবর/এসএ/এফএ)