আজ ঘটনাবহুল ৭ নভেম্বর

প্রকাশ | ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৫৮ | আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

আজ ৭ নভেম্বর, বাংলাদেশের ইতিহাসের ঘটনাবহুল দিন। ১৯৭৫ সালের এদিনে ঘটে ক্যু-পালটা ক্যুসহ অনেক নাটকীয় ঘটনা, যার মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসার পথ সুগম হয়। 
বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। তবে এ বছর বর্তমান পরিস্থিতিতে দলটি কর্মসূচি স্থগিত রেখেছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দিনটিকে মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে। 

১৯৭৫ সালের এদিনে সিপাহী বিপ্লবের নামে প্রথমে হত্যা করা হয় খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম, কে এন হুদা বীর উত্তম এবং এ টি এম হায়দার বীর বিক্রমকে। দশম বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদর দপ্তরে অবস্থানকালে সকালে তাদের একেবারে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে দুজন কোম্পানি কমান্ডার আসাদ এবং জলিল। 
এছাড়াও এ বিষয়ে ঐদিনের বর্ণনায় সাংবাদিক  অ্যান্থনী ম্যাসকারেনহাস লিখেছেন, ‘উচ্ছৃঙ্খল সৈনিকেরা একজন মহিলা ডাক্তারসহ ১৩ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এমনকি একজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীকেও এ সময় হত্যা করা হয়।’

লেখক গবেষক গোলাম মুরশিদ তার ‘মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর’ গ্রন্থে  লিখেছেন, শাফায়াত জামিল বিদ্রোহের খবর পেয়েও থেকে গিয়েছিলেন বঙ্গভবনে। কিন্তু যখন উচ্ছৃঙ্খল বিদ্রোহী সেনারা স্লোগান দিতে দিতে বঙ্গভবনের কাছাকাছি পৌঁছে যায়, তখন তিনি সঙ্গীদের নিয়ে দেয়াল টপকে পালিয়ে যান। এতে তার পা ভেঙে যায় এবং পরে ধরা পড়েন। তার জায়গা হয় সামরিক হাসপাতালে। তিনি বেঁচে যান।

এর আগে ৬ নভেম্বর ভোর রাতে গৃহবন্দি জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করতে যায় বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুকের ল্যান্সার বাহিনীর একটি দল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় যার বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল সেই ল্যান্সার মহিউদ্দিন ছিল এই দলের নেতৃত্বে। তারা জিয়াকে মুক্ত করে নিয়ে আসে কর্নেল রশিদের দুই নম্বর অ্যার্টিলারি রেজিমেন্টের দপ্তরে। 

গোলাম মুরশিদ আরও বলেন, ‘মুক্তি পেয়েই জিয়াউর রহমান সদ্য নিযুক্ত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাদত সায়েমের সঙ্গে কথা না বলেই বেতারে  ভাষণ দিতে চলে যান। ’৭১-এর ২৭ মার্চের মতোই সংক্ষিপ্ত ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর অনুরোধে তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। একাত্তরের ২৭ মার্চ তিনি প্রথমে নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করেন। পরে শুধরে নিয়েছিলেন। এবারও তিনি নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ঘোষণা করেন। পরে উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক  হয়েছিলেন।’ পরবর্তীতে একে একে গণভোট, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, স্থানীয়  পরিষদ নির্বাচন এবং পার্লামেন্ট নির্বাচন দিয়ে জিয়াউর রহমান নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। 

 

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ আজ দেশব্যাপী সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান দিবস নামে দিনটি পালন করবে। এ উপলক্ষে  জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি বিকাল ৩টায় শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে জাসদ নেতা শহীদ কর্নেল তাহের বীরউত্তমের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং আলোচনাসভার আয়োজন করেছে।  অনুষ্ঠানে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপিসহ দলের কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন। 

(ঢাকাটাইমস/৭নভেম্বর/এফএ)