নোবিপ্রবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের বেহাল অবস্থা

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৯:৩০

মো. নিয়াজ উদ্দিন, নোবিপ্রবি

লম্বা লম্বা ঘাস, যত্রতত্র ছোট ছোট গর্ত ও চারপাশ ঝোপঝাড়ে আচ্ছাদিত হয়ে খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। সংশ্লিষ্ট বিভাগের যথাযথ তদারকির অভাবে মাসের পর মাস ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র খেলার মাঠটি। এদিকে দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সকল সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি খেলার মাঠ দাবি করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের অবস্থা খুবই নাজেহাল। পুরো মাঠের সর্বত্র উঁচু-নিচু হয়ে আছে, রয়েছে ছোট ছোট গর্ত। পানি জমে গেলেও নেই কোনো নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, মাঠের মধ্যে ঘাসগুলো বড় আকার ধারণ করেছে। মাঠের চারপাশ ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। দেখলে মনে হবে এ যেনো ছোটখাটো একটি বন। মাঠের মধ্যে নেই খেলোয়াড়দের বিশ্রামের জায়গা, নেই নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা। খেলার মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সার্বক্ষণিক কোনো মাঠকর্মীও নেই। উল্টো খেলার মাঠের বিরাট একটি অংশজুড়ে করা হচ্ছে চাষাবাদ।

সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন অব্যবস্থাপনায় ফেলে রাখায় খেলাধুলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে এ মাঠটি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী খেলতে গিয়ে আহত হয়েছে। পায়ের লিগামেন্ট ছিড়ে যাওয়া, পায়ের গোড়ালি মচকে গিয়ে গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ খেলার বাইরে আছেন বেশকিছু নিয়মিত খেলোয়াড়।

মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও খেলোয়াড় ইয়াসিন আল রিয়াদ বলেন, নোবিপ্রবিতে একটি মাত্র খেলার মাঠ রয়েছে। বিকাল হলেই আমরা মাঠে ফুটবল, ক্রিকেট খেলতাম। আমরা এই মাঠে প্র্যাক্টিস করে  বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপ্রেজেন্ট করতে যাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, কিন্তু মাঠের এই বেহাল দশার কারণে আমরা প্রায়ই ইনজুরি হয়ে যাই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন টিমের ২ জন প্লেয়ারের লিগামেন্ট ইনজুরিও হয়েছে এই মাঠের কারণে।

রবিউল আওয়াল পিয়াস নামে এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুক স্ট্যাটাস এ লিখেছেন, আমি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল এবং ক্রিকেট টিমের একজন নিয়মিত সদস্য। গতবছর এবং এইবছর সকল খেলাতেই আমি অংশগ্রহণ করেছি। এখন আসি আসল কথায়, অনেকে ফুটবল খেলায় হারলে প্রশ্ন করেন বা ক্রিকেটে হারলেও প্রশ্ন করেন। এখন আমার প্রশ্ন বলেন ‘ত’ বাংলাদেশের কোন ইউনিভার্সিটির মাঠে এইরকম ঘাস, মাঠের সব জায়গায় টুকটাক গর্ত আছে।

লোকমান হোসেন ইমন নামে এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের অবস্থা একেবারে শোচনীয়। খেলার মাঠটি একদম সমান নয়। বৃষ্টি আসলে পানি জমে যায় মাঠের বিভিন্ন জায়গায়। এছাড়া খেলার মাঠের চারদিক দিয়ে যে বাউন্ডারি আছে সেটি সঠিকভাবে দেয়া নেই। পরিচ্ছন্নতার অভাবে বিভিন্ন ঝোঁপঝাড় জঙ্গলে ভরে গেছে মাঠের একাংশ। এছাড়া মাঠের পাশে বসে খেলা উপভোগ করার জন্য পর্যাপ্ত বসার জায়গার ব্যাবস্থা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা দ্রুত আমাদের মাঠ সংস্কার চাই। এবং তাড়াতাড়ি মাঠের ঘাসগুলা কেটে, মাঠকে খেলার উপযোগী করা এটাই আমাদের দাবি। আমরা যাতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে খেলতে পারি সেই ব্যবস্থা করা হউক।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীরর্চ্চা শিক্ষা বিভাগের পরিচালক মো. রুবেল মিয়া বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মাঠ সংস্কারের জন্য কাজ শুরু করেছি, আশাকরি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মাঠ সংস্কারের কাজ শেষ হবে। আমরা আগামী ১৭ তারিখের পর আমরা আন্ত:ডিপার্টমেন্ট ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করতে পারবো। এছাড়া আমরা শিক্ষার্থীদের নেট অনুশীলন সুবিধা নিশ্চিতের জন্য, নেট অনুশীলনের ব্যবস্থা করছি এবং এর কাজ শুরু হয়ে গেছে। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৯ নভেম্বর/ইএইচ)