বোয়ালমারীতে চা বিক্রি করা মেয়েটি পেল জিপিএ-৫

প্রকাশ | ২৬ নভেম্বর ২০২৩, ২১:৫৬

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

আর পাঁচটি শিক্ষার্থীর মতো মসৃণ ছিল না স্মৃতি পারভীনের শিক্ষা জীবন। গাছ ব্যবসায়ী বাবার অনাটনের সংসারের একটু সচ্ছলতার জন্য দুই বোন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়ির নিকট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে চায়ের দোকান দিয়ে চা বিক্রি করা শুরু করে সংসারের হাল ধরে। মেধাবী শিক্ষার্থী হওয়া শর্তেও জীবন যুদ্ধে  সকাল থেকে পালাক্রমে দুই বোনকে সামলাতে হয়েছে দোকানদারি, তার পাশাপাশি চালিয়ে গিয়েছে পড়ালেখা। এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে স্মৃতি পারভীন।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী ময়না ইউনিয়নের ময়না গ্রামের গাছ ব্যবসায়ী মো. হারুনার রসিদের মেজ মেয়ে স্মৃতি। এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় বোয়ালমারী কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজের কারিগরি শাখা থেকে  জিপিএ -৫ পেয়েও ভবিষ্যত পড়ালেখার চিন্তায় বিষন্ন সে। ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায় স্মৃতি। চায় ভবিষ্যতে বিসিএস ক্যাডার হতে। কিন্তু তিন ভাই বোনের পড়া লেখা সাথে সংসারের হাল ধরা স্মৃতি জানে না সেটা সম্ভব হবে কিনা। বড় বোন মনিকা ফরিদপুর সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে মাস্টার্স-এ ভর্তির অপেক্ষায়। ছোট ভাই স্থানীয় এসি বোস ইনিস্টিউটের শিক্ষার্থী। বাবার অনাটনের সংসারে অনিশ্চিত তার পড়ালেখা। স্মৃতি পারভীন ময়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ভর্তি হয় ময়না এসি বোস ইনিস্টিউটে। সেখান থেকে সাফল্যের সাথে এসএসসি পাস করে ভালো কলেজে সুযোগ পেয়েও সংসারের অনাটনের জন্য ভর্তি হতে হয় উপজেলা সদরের কাজী সিরাজুল ইসলাম মহিলা কলেজে।

কলেজটির অধ্যক্ষ মো ফরিদ আহমেদ জানান, অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী স্মৃতি পারভীন। হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে সে, পড়ালেখার পাশাপাশি চা বিক্রি করত স্মৃতি পারভীন।  যে কারণে নিয়মিত ক্লাস করতে পারে নাই। বিষয়টি জানার পরে আমরা তাকে সুযোগ করে দিয়েছি, তার সাফল্যে আমরা খুশি এবং সে যাতে ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সু্যোগে পায় সে ব্যাপারে আমাদের কলেজের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করবো।

(ঢাকা টাইমস/২৬নভেম্বর/প্রতিনিধি/এসএ)