পঞ্চগড়ে বিচারককে বাদীর জুতা নিক্ষেপ
প্রকাশ | ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:৪৮ | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯:০১
পঞ্চগড়ে একটি হত্যা মামলার ১৬ আসামির জামিন মঞ্জুর করায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট অলরাম কার্জীকে লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করেছেন মামলার বাদী। এ ঘটনায় বাদী মিনারা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঘটনাটি ঘটে।
আদালত ও আইনজীবীদের একাধিক সূত্র জানায়, গত ৫ ডিসেম্বর উপজেলা সদরের সাতমেরা এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে দুই ভাইয়ের পরিবারের মারামারিতে ইয়াকুব আলী (৮৩) নামের একজনের মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতেই নিহতের মেয়ে মিনারা আক্তার বাদী হয়ে ছোট ভাইসহ ১৯ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সোমবার আসামিদের মধ্যে প্রধান আসামিসহ ৫ জন বাদে ১৬ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে বাদী মিনারা আক্তার বিচারককে লক্ষ্য করে জুতা ছুড়ে মারেন। এ সময় বিচারকের নির্দেশে তাৎক্ষণিক বাদী মিনারাকে আটক করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়।
নিহতের বড় ছেলের স্ত্রী রওশনা আক্তার লিলিসহ বাদী পক্ষের স্বজনরা বলেন, এমন একটি হত্যা মামলার আসামিদের কীভাবে কোন আইনে জামিন দেওয়া হয়। আমরা এর বিচার চাই। আবার আমাদের মামলার বাদীকে পুলিশ আটক করে রেখেছে। তাকে ছেড়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা আদালত থেকে যাবো না।
জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু মো. ইউনুস আলী লেলিন বলেন, বাদীর নিম্ন আদালতের রায় যদি আমাদের পছন্দ না হয় তাহলে উচ্চ আদালতের যাওয়া সুযোগ আছে। কিন্তু বাদী আজকে বিচারক অলরাম কার্জীকে লক্ষ্য করে স্যান্ডেল ছুড়ে মেরেছে। জুতাটি বিচারকের সামনে থাকা গ্লাসে লেগে নিচে পড়ে যায়। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। এরপর যে আইনজীবী বা অন্য কাউকে মারা হবে না, তা মনে করা যাবে না। জামিনের ঘটনাটি আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে আছে। বাদীর উচ্চ আদালতের যাওয়া সুযোগ আছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, কয়েকদিন আগে বাদীর বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে তাদের বাড়িতে কুলখানি হচ্ছে। এ অবস্থায় একটি হত্যা মামলায় সব আসামির জামিন দেওয়া কোনভাবে কাম্য নয়। বিচারকের এমন অর্ডারে আমরা তাৎক্ষণিক আদালত ত্যাগ করে চলে আসি।
আসামি পক্ষের আইনজীবী রাকিবুত তারেক বলেন, আসামিদের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন আদালত। আর মামলার যারা মূল আসমি, তারা আত্মসমর্পণ করেননি। যারা আত্মসমর্পণ করেছেন, তাদের অধিকাংশই নারী ছিল। এছাড়া আসামিদের বক্তব্য ছিল, ওই ব্যক্তি হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী বলেন, আদালতে একটু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কথা শুনেছি। ছুটির কারণে জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয় ছুটিতে আছেন। আইনজীবী সমিতির সভাপতিও কোর্টে আসেননি। এজন্য আপাতত আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে কিছু বলা যাচ্ছে না।
(ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/জেডএম/ইএইচ)