বিজয়ের ৩দিন পর হানাদারমুক্ত হয় ভৈরব

প্রকাশ | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১১ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১৪

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

১৯৭১ সালে বিজয়ের তিনদিন পর ১৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত হয়। কারণ সেসময় টেলিযোগাযোগ, ওয়ারলেস ও টেলিগ্রাম সিস্টেম নষ্ট হয়ে যাওয়াই রেডিওর প্রচারে পাকহানাদাররা বিশ্বাস করতে পারছিল না তাদের বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। 

এর আগে পূর্বাঞ্চলীয় শহর চট্রগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, আখাউড়া, কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আশুগঞ্জ এলাকায় মিত্রবাহিনীর সঙ্গে পরাজিত হয়ে প্রায় ১০ হাজার পাকসেনা ভৈরবে অবস্থান নেয়। ১১ ডিসেম্বর ভৈরবে আসার পর ১৩ ডিসেম্বর ভৈরব-মেঘনা রেলওয়ে সেতুটি ডিনামাইট দিয়ে ধ্বংস করে দেয় তারা। এতে ঢাকা-চট্রগ্রাম রেলপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পাকসেনাদের ধারণা ছিল মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা পায়ে হেঁটে সেতু দিয়ে আশুগঞ্জ থেকে ভৈরবে পৌঁছে যেতে পারে। সেজন্য নিজের রক্ষার জন্য সেনারা ভৈরবে আসার পর রেলওয়ে স্টেশন, বিদ্যুৎ অফিস, টেলিফোন অফিস ধ্বংস করে। 

তারা তৎকালীন ন্যাশনাল ব্যাংকের (বর্তমান সোনালী ব্যাংক) ট্রেজারির সিন্দুক ভেঙ্গে টাকা-পয়সা লুটপাট করে। এসময়ে হানাদাররা বুঝতে পারে তাদের পরাজয় খুব নিকটে। এসময়ে মিত্রবাহিনী আকাশ পথে যুদ্ধবিমান থেকে ভৈরব শহরের ওপর গোলাবর্ষণ করতে থাকে। এতে হানাদার বাহিনী আতঙ্কিত হয়ে যায়। তারা খাবারের সঙ্কটে দিশেহারা হয়ে যায়। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী ভৈরবের চারিদিকে অবস্থান নিয়ে মাইকে পাকসেনাদের আত্মসমর্পন করার ঘোষণা করে। তারপর ১৯ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর উর্ধ্বতন অফিসারগণ বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা থেকে চিঠির মাধ্যমে ভৈরবের সেনাদের আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেয়। 

এচিঠি পেয়ে এদিন ভৈরবের প্রায় ১০ হাজার পাকসেনা মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণের পর ভৈরববাসী ও মুক্তিযোদ্ধারা আনন্দে মেতে উঠে। স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে মানুষ উল্লাস করতে থাকে। শ্লোগান দিতে থাকে জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। 

(ঢাকাটাইমস/১৯ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/জেডএম)