বসিলায় বাড়ি ভাঙচুর ও জমি দখলের চেষ্টা, থানায় মামলা

প্রকাশ | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৪:৩৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় জোরপূর্বক অন্যের জমি দখলের চেষ্টা ও একটি বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে। তারা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার তারেকুজ্জামান রাজীবের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

সোমবার রাতে এ ঘটনার পর হাজারীবাগ থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। এতে ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। থানা পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মোহন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

ডিএমপির ধানমন্ডি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আবু তালেব ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ঘটনার দিন মাহবুবুর রহমান নামে একজনের জমি দখলের চেষ্টা করছিল দুর্বৃত্তরা। সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা ও ব্যানার ভাঙচুর করা হয়। পরে আলী হোসেন নামে এক হাউজিং ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা হয়। এ ঘটনায় হাজারীবাগ থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ মোহন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে ‘

স্থানীয়দের দাবি, এই অপরাধী গ্রুপটি বসিলা, চাঁদ উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় এমন কোনো অপরাধ নেই যাতে জড়িত নেই। পূর্বের বিভিন্ন অপরাধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে। জামিনে বেরিয়ে একই অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তাদের অত্যাচারে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ। এই গ্রুপকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কবির হোসেন নামে একজন। কবির, মোহনসহ এই গ্রুপের সবাইকে পরিচালনা করেন সাবেক কাউন্সিলর রাজীব।

হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমাদের টিম পাঠানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সবাই পালিয়ে যায়। পরে মোহনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আজ আদালতে তোলা হয়েছে।’

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, জমি দখল ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় যে দুটি মামলা হয়েছে, তাতে সাবেক কাউন্সিলর রাজীবকে আসামি করতে চেয়েও সেটা হয়নি। কারণ, রাজীব বিভিন্ন জায়গা থেকে তদবির চালিয়েছে। এমনকি বাদীদের ফোন করে হুমকি দিয়েছে, যাতে তারা কেউ মামলা না করেন। পরে পুলিশের ঊধ্বর্তনদের তৎপরতায় হাজারীবাগ থানায় মামলা হয়। ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার আলোচিত কাউন্সিলর রাজীব জামিনে মুক্ত হওয়ার পর মোহাম্মদপুরে ত্রাসের রাজনীতি শুরু করেছেন বলে দাবি করেছে সূত্রটি। 

ভুক্তভোগী দুইজন যা বলছেন

ভুক্তভোগী মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি ও আমার বোন বসিলায় ১৩ শতাংশ জমির ক্রয় সূত্রে মালিক। যা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দখলে রয়েছে। কিছুদিন ধরে মো. কবির হোসেন ও তার ভাই মো. মুকুলের নেতৃত্বে মো. সাদেক, মোতালেব হোসেন, আক্তার হোসেন, মো. রিতু, মো. শাকিব, মো. মোহন, মো. শাহিন, সোলেমান, রাসেল চৌকিদার, মো. বাবু, মো. রাফি ও মো. সেলিম জমিটি দখল করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিভিন্ন সময় আমাকে ও আমার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছিল। এরই জের ধরে গতকাল জায়গা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়। এদিন ২০/২৫ জন জমি দখলের চেষ্টা করে এবং সেখানে থাকা সিসি ক্যামেরা, সাইনবোর্ড ও গেট ভাঙচুর করে। পরে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।’

এদিকে ভুক্তভোগী আরেক ব্যবসায়ী মো. আলী হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমার বাড়িতে হামলা করেছে। আমি স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। এরপরও কেন হামলা করল জানি না। বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা করেছি। একজন গ্রেপ্তার হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা হামলা করেছে তারা সাবেক কাউন্সিলের অনুসারী। কারণ, আমি যখন মামলা করতে থানায় ছিলাম তখন রাজীব আমাকে ফোন করেছিলেন। বলেছেন মামলা না করতে, তিনি সব মীমাংসা করে দেবেন।’

এসব বিষয়ে জানতে সাবেক কাউন্সিলর রাজীবকে তার একাধিক ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

(ঢাকাটাইমস/১৯ডিসেম্বর/এসএস/এফএ)