ভোট দিতে বাধ্য করা এবং বাধা দেওয়া দুটোই মানবাধিকার লঙ্ঘন: কামাল উদ্দিন
প্রকাশ | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:৩১ | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩:৪২
ভোটারদেরকে ভোট দিতে বাধ্য করা এবং কেউ ভোট দিতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়া- দুটোই মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কেউ ভোট না দিলেও তার ইচ্ছা। এ ক্ষেত্রে জোর করা যাবে না। আর কেউ দিতে চাইলে তাকে বাধা দেওয়াটাও অন্যায়।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন।
কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো কোনো দেশ আছে, যেখানে ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক, যেমন নিউজিল্যান্ড। কিন্তু আমাদের দেশে সে ধরনের নিয়ম নেই। সে কারণে আমি বলব, কেউ যদি ভোট না দিতে চায় তাহলে সেটা তার ইচ্ছা। কিন্তু কেউ যদি দিতে চায় তাকে বাধা প্রদান করা অনুচিত, আইনের বরখেলাপ এবং এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। একইসঙ্গে কাউকে যদি ভোট দিতে বাধ্য করা হয় সেরকম প্রমাণ থাকলে এটা আচরণবিধি লঙ্ঘন, অধিকার লঙ্ঘন।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়েছি এবং আগামী কয়েকদিনেও যাব, জনসংযোগ করব, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করব, যাতে করে মানুষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।’
বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন পরেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সবাই জানি নির্বাচন একটি অধিকার, আমাদের সবার সাংবিধানিকভাবে আন্তর্জাতিক দলিল মোতাবেক নির্বাচন করা এবং নির্বাচিত হওয়া দেশের নাগরিকের অধিকার। সে অধিকারটি যাতে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা যায় এবং দেশে একটি সুন্দর নির্বাচন সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা আজকে নির্বাচন কমিশনে এসেছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠকে আমরা বিশেষত নির্বাচনপূর্ব সময়ে আচরণ এবং কার্যক্রম, নির্বাচন সময়কার আচরণ এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ের আচরণের বিষয়ে আলোচনা করেছি। এই আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল, আমরা অনেক সময় দেখেছি নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করে রাতে, কর্মীরা বিভিন্ন রকমের উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং মানুষের আস্থা অর্জনে ব্যাহত হয়, সে ধরনের কিছু যেন না হয়ে থাকে সেজন্য আমরা নির্বাচন কমিশনকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সময় অনেক সময় অনেক ধরনের উত্তেজনার সৃষ্টি করা হয়, বিশেষ করে যারা সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য অথবা পঙ্গু বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তাদের ক্ষেত্রে অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। সেগুলো যেন না হয় এবং প্রত্যেক প্রার্থী যাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমরা বলেছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন সেক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা পালন করে সেটা আমরা স্মরণ করে দিয়েছি।’
‘নির্বাচন পরবর্তী সময় আমাদের অভিজ্ঞতায় অতীতে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা অনেক ঘটেছিল এমন অবস্থা যেন কখনোই না হয় এবং সেই ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দরকার হলে যথাযথ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন কৌশল নির্ধারণ করে তারা এই কাজটি সম্পন্ন করবেন সে কথা আমরা বলেছি।’-যোগ করেন তিনি।
মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা চাই দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং এজন্য আমাদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে জনসংযোগ করে যাচ্ছি এবং করব এবং আমরা বিশ্বাস করি এটা সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ হবে।’
(ঢাকাটাইমস/২৮ডিসেম্বর/এলএম/এফএ)