সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে দিনাজপুর, বিপর্যস্ত জনজীবন
প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:২৬
ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া আর কনকনে শীতে কাঁপছে দিনাজপুর। পৌষ মাসের শেষ প্রান্তে এসে এ জেলায় এখন জবুথবু অবস্থা বিরাজ করছে।
শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াচ্ছন্ন চারপাশ। বৃষ্টির মতো গুড়িগুড়ি পড়ছে শিশির। গত তিনদিন ধরে দেখা মিলছে না সূর্যের। দুপুরের পর একটু উঁকি মারলেও নিমিষেই তা নিভে যাচ্ছে। তীব্র শীতের কারণে প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না। সড়কেও কমেছে মানুষের চলাচল। কাজ না পাওয়ায় শ্রমজীবী মানুষরাও পড়েছেন বিপাকে। খরকুটো জ্বালিয়ে কেউ শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
এ দিকে শীতজনিত রোগের সংখ্যাও বাড়ছে। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, অরবিন্দু শিশু হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে শীতজনীত রোগী বেড়েছে। এতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্সসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আজ তাপামাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। যা দেশের সর্বনিম্ন এবং জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে জেলার উপর দিয়ে। তবে শীত কমে ১৮ বা ১৯ জানুয়ারি জেলায় বৃষ্টি হতে পারে।
এ দিকে জেলায় শ্রমবাজার খ্যাত ষষ্টতলায় কাজের সন্ধানে থাকা বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বাহোইল গ্রামের শাহজাহান আলী (৬০) বলেন, শীতে অবস্থা কাহিল। কাজ কাম নাই, বসে আছি। পেটের তাগিদে বাইরে বের হইছি। পাইসা-কড়ি না থাকায় এবার গরম কাপড় কিনা হইনি। খুব কষ্টে দিন কাটেছে বাপু। পারলে এগনা কম্বল-টম্বল দিয়া সাহায্য করেন।
কাজের সন্ধানে থাকা শহরের হঠাৎপাড়া এলাকার মোহেচেনা বেগম (৪২) জানান, ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো কামকাইজও করা যায় না। কাম না করিলে টাকা দিবে কে? গরিব মানুষের বাঁচার উপায় নাই। যে তরিতরকারির দাম। কাছেই ভিড়া যায় না। খাবো না গরম কাপড় কিনবো? এই শীতে কেমন করে বাঁচবো আল্লাহই জানে।
বীরগঞ্জের নিচপাড়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক (৪৫)বলেন, হিমেল বাতাস আর ঠান্ডায় হাত-পা ককড়া লেগে বরফ হয়ে যাচ্ছে। গরু-ছাগলও বাড়ির বাইর করা যাচ্ছে না। প্রাণিকুলের অবস্থাও কাহিল।
দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন এএইচএম বোরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতজনিত রোগে আক্রান্তের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ জন্য শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখাসহ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
(ঢাকাটাইমস/১৩জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)