ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষাণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় নির্বাচনি এলাকাভিত্তিক (এমপি) উন্নয়ন ৩য় কিস্তির প্রকল্প কাগজ-কলমে আছে কিন্তু বাস্তবে নেই।
এসব প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা কাজ না করেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে উত্তোলন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে নেই কোনো প্রকল্পের সাইনবোর্ড। সরকারি এসব কাজ সম্পর্কে জানে না সেখানকার স্থানীয়রা। জানে না কেউ, যে এখানে বরাদ্দ কত? আর এই প্রকল্পের জন্য সাবিনা ইয়াসমিন নিলুকে প্রকল্প সভাপতি করে কোন কাজ না করে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মো. মইনুল ইসলামকে ম্যানেজ করে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী টিআর প্রকল্পের কাজ করার সময় প্রকল্পের নাম, টাকার পরিমাণ ইত্যাদি উল্লেখ করে সাইনবোর্ড দেওয়ার কথা থাকলেও তা টাঙানো হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী রাস্তার কাজ করা হয়নি।
এলাকাবাসীরা বলেন, বেগুন জোয়ার মসজিদ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তা সংস্কার করণের এখনো কোনো কাজ চোখে পড়েনি।
বদলগাছী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের বেগুনজোয়ার মসজিদ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তা সংস্কারকরণ কাজে ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু সরেজমিনে আধাইপুর ইউপির বেগুনজোয়ার গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মসজিদ থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত মাটির রাস্তায় কোন মাটি কাটার কাজ হয়নি।
প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আমিনুল বলেন, বেগুনজোয়ার গ্রামে মসজিদ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত কোন রক্ষণাবেক্ষণ বা মাটি কাটার কাজ হয়নি। কাজটি কে পেয়েছে তাও জানি না।
এ ব্যাপারে আধাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল কবির পল্টন বলেন, এই কাজ কে পেয়েছে আমি জানি না। তবে ওখানে কোনো প্রকার কাজ হয়নি। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখেন।
এ ব্যাপারে প্রকল্পটির সভাপতি সাবেক সংরক্ষিত আসনের সদস্য, বদলগাছী উপজেলা যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও আধাইপুর ইউনিয়ন যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী এবংনওগাঁ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন নিলু বলেন, উপজেলার আধাইপুর ইউনিয়নের বেগুনজোয়ার মসজিদ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রাস্তা সংস্কারকরণ কাজের জন্য আমাকে ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখনো কাজ করা হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মাইনুল ইসলাম বলেন, আমি কিছু বলতে পারবো না। আপনাদের যা ইচ্ছা তাই করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৃপ্তি কণা মন্ডল বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। প্রকল্পটি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/ ইএইচ)