তৃতীয় দফার মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পঞ্চগড়

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৫৯ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

তৃতীয় দফার মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে পঞ্চগড় জেলাবাসী। তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সর্ব উত্তরের এই জনপদ। দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয়রা। বিশেষ করে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরম পর্যায়ে।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ভোর ৬টায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যানুযায়ী, নতুন বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি প্রথম দফায় পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। ওই সময় ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। তার মধ্যে ৩ জানুয়ারি ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি, ৪ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি, ৫ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি, ৬ জানুয়ারি ৯ দশমিক ৭ এবং ৭ জানুয়ারি ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়।  দ্বিতীয় দফায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ দেখা দেয় গত ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি। এর মধ্যে ১৩ জানুয়ারি ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি ও ১৪ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে তাপমাত্রা রেকর্ডের তথ্যটি জানান জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

তিনি জানান, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন রয়েছে এ জনপদ। ঘন কুয়াশার কারণে গতকালও দেখা মিলেনি সূর্য। বিশেষ করে উত্তরপূর্ব বা উত্তরপশ্চিম দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। 

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আজও ভোর থেকে মেঘ আর কুয়াশার আবরণে ঢাকা রয়েছে এ জেলা। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়স্করা। শীতের কারণে কমে গেছে শ্রমজীবী মানুষের দৈনন্দিন আয়। পরিবার-পরিজন নিয়ে অতিকষ্টে দিনযাপন করছেন তারা। বাধ্য হয়ে শীত উপেক্ষা করেই কাজে বের হচ্ছেন তারা। ফলে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

কিছু কিছু এলাকায় দেখা গেছে পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় শীত নিবারণের জন্য খড়কুটো জ্বালিয়ে উত্তাপ নেওয়ার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ।

এ পরিস্থিতি প্রভাব ফেলেছে কৃষি খাতেও। ঠান্ডার প্রকোপে নষ্ট হচ্ছে বীজতলা। বিশেষ করে আলু খেতে দেখা দিয়েছে ছত্রাকের আক্রমণ।  অতি মাত্রায় শীতের কারণে গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর্লি ব্লাইট দেখা দেওয়ায় ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন স্থানীয় কৃষকরা। 

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, শীতপ্রবণ জেলা হিসেবে প্রতি বছর পঞ্চগড়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে পর্যাপ্ত কম্বল বিতরণ করা হয়। এবারও প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ২৮ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া বেসরকারিভাবেও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রত্যন্ত এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারিভাবে আরও কম্বলের চাহিদা রয়েছে। নতুন করে কম্বল বা শীতবস্ত্র পাওয়া গেলে দ্রুত বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

 (ঢাকাটাইমস/১৮জানুয়ারি/পিএস)