মৃত্যুর পর ছোট পাথরে পরিণত ১৫ মাসের শিশু!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:০৩| আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:০৮
অ- অ+

মাত্র ১৫ মাস বয়সে কন্যা সন্তানকে হারান মার্কিন দম্পতি কাইলি এবং জেক ম্যাসি। এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাদের ছোট্ট সন্তান পপির। তবে মেয়েকে হারালেও তার অস্তিত্ব ধরে রাখার বিশেষ উপায় খুঁজে পেয়েছেন সন্তান-হারা এই দম্পতি। মেয়ের মৃত্যুর পর তাকে পাথরে পরিণত করে নিজেদের কাছে ধরে রাখলেন তারা। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগছে? বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের আইডাহোতে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের এপ্রিলে মারা যায় আইডাহোর বাসিন্দা কাইলি এবং জ্যাক ম্যাসির ১৫ মাসের সন্তান পপি। তাদের মেয়ে ‘টিবিসিডি’ নামক এক বিরল জেনেটিক রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। পপির যখন ৯ মাস বয়সে তখন সে এই রোগে আক্রান্ত হয়। যদিও জন্মানোর সময় পপি একেবারে সুস্থ ছিলেন বলে জানিয়েছেন কাইলি।

পপির যখন ৪ মাস বয়স, তখন মার্কিন দম্পতি লক্ষ্য করেন, তাদের সন্তানের দৃষ্টিশক্তি ঠিকমতো বিকশিত হচ্ছে না। তারপর তারা বেশ কয়েকজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করেন। কিন্তু কোনও সুরাহা না হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শেই পপির এমআরআই করান তারা।

পপির এমআরআই রিপোর্টে দেখা যায়, তার মস্তিষ্কের মাঝখানের অংশ কর্পাস ক্যালোসাম ঠিকমতো বিকশিত হয়নি। এরপর ৫ মাস বয়সে পপির টিবিসিডি নামক বিরল রোগ ধরা পড়ে। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে পপির শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা পপির ফুসফুসে নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ধরা পড়ে।

হাসপাতালে কয়েকদিন ভর্তি থাকার পর পপির শ্বাসকষ্ট অতিরিক্ত হওয়ায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু, ক্রমশ তার অবস্থা আরও সংকটজনক হয়ে ওঠে। এসময় চিকিৎসকেরা জানান যে কোনো সময় মারা যাবে পপি। পপির শেষ লগ্ন আসন্ন হলে মার্কিন দম্পতি তাদের আরও দুই সন্তানকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন এবং তারা আইসিইউ-তে ঢুকে ছোট্ট বোনকে গুডবাই জানায়। এর ৫ ঘণ্টা পরই পপির মৃত্যু হয়। মেয়ের মৃত্যু হলেও তাকে ছাড়তে পারছিলেন না কাইলি ও জ্যাক ম্যাসি। তারা পপির শেষকৃত্য করলেও তার দেহাবশেষ বাড়িতে রাখতে চেয়েছিলেন।

কাইলি জানান, তারা পপির দেহাবশেষ বাড়িতে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাড়িতে তাদের আরও দুই ছোট সন্তান রয়েছে। তাই এমন কিছু ঘরে রাখতে চাননি, যেটা তাদের সন্তানের মনের ওপর প্রভাব ফেলে বা তারা ভয় পায়। সেই সময়ে তারা একটি সংস্থার খোঁজ পান, যেখানে দেহাবশেষ থেকে সুন্দর পাথর তৈরি করা যায়। ওই সংস্থার ক্যাটলগে লেখা ছিল, ছাই থেকেও সুন্দর পাথর তৈরি করা যেতে পারে, যাকে বিভাজন পাথর বলা হয়। অনিচ্ছা ও কিছুটা সংশয় নিয়েই শেষ পর্যন্ত সেই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই মার্কিন দম্পতি।

পপির মৃত্যুর কয়েক মাস পর ওই মার্কিন দম্পতির বাড়িতে হাতে লেখা একটি নোট এবং একটি সুন্দর বাক্স আসে। যা দেখে হতবাক হয়ে যান কাইলি ও জ্যাক। নোটটিতে লেখা ছিল, ‘আপনার মেয়েকে আমাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’ এরপর বাক্সটি খুলতে দেখা যায়, তার ভিতরে ১৩-১৪টি ছোট সাদা রঙের পাথর ছিল, যা দেখতে খুব সুন্দর। এগুলোই পপির দেহাবশেষ থেকে তৈরি পাথর।

এই সুন্দর পাথরগুলো সযত্নে পপির দোলনায় রাখেন কাইলি এবং জ্যাক। যেটা দেখে তাদের মনে হয়, তাদের মেয়ে সব সময়ে বাড়িতে রয়েছে। এমনকি তারা কোথাও বেড়াতে গেলেও ওই পাথরগুলো সঙ্গে নিয়ে যান।

(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জয়পুরহাটে জামিন নিতে গিয়ে কারাগারে দুই আ. লীগ নেতা
সামিট-ইউনাইটেডসহ ১৫৮ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নথি নিল দুদক, ক্যাপাসিটি চার্জের নামে লুটপাট ১ লাখ কোটি
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধে উদ্বিগ্ন ভারত
নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে: আমির খসরু
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা