রংপুরে আলুখেতে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ, বিপাকে কৃষক

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:৪৪

রেজাউল ইসলাম বাবু, রংপুর

আলুর খেতে ‘লেট ব্লাইট’ (পচন রোগ) দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে রংপুর অঞ্চলের কৃষকেরা। খেতের ফসল রক্ষায় জমিতে ছত্রাক নাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের হিসাবে চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এক লাখ ৬০২ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছে। এ বছর রংপুর অঞ্চলে ৯৮ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও দুই হাজার ৯২ হেক্টর বেশি জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। গত বছর রংপুর অঞ্চলে ৯৭ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছিল।
কৃষকরা জানান, গত বছরে আলুর ভালো দাম পাওয়ায় এবার তারা বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর চাষ করেছিলো। কিন্তু এবার লেট ব্রাইট রোগ দেখা দেওয়ায় এখন ফসল বাঁচাতে জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের বিরামহীম গ্রামের কৃষক সফর উদ্দিন খান জানান, শীতের প্রকোপ বেশি হওয়ায় আলুখেতে রোগ নিয়ে চিন্তিত।
একই গ্রামের দুলাল ইসলাম জানান, এবার তিনি ৫ একর জমিতে আলুর চাষ করেছেন। কিন্তু পাতা পচা রোগ দেখা দেওয়ায় কিছুটা চিন্তিত। 
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা আলুর খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ পানি দিচ্ছে, কেউ স্প্রে করছেন আবার কেউ আগাছা পরিস্কার করছে।
 নগরীর বোতলা এলাকার কৃষক রুবায়েত জানান, এবার আলুর মৌসুমের শুরুতে বীজ আলু ও সার সংকটের কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে আলুর ফলন ভালো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আলু নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে না।
কৃষি বিভাগ বলছেন, আলু চাষের জন্য বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। দেশে দেশি ও উচ্চফলনশীল দুই জাতের আলু চাষ করা হয়। উচ্চফলনশীল জাতের আলু চাষ করলে ফলন বাড়বে এবং উৎপাদন খরচ কমে আসবে। সেই সাথে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে।
 রংপুর অঞ্চলের কৃষকেরা এবার গ্রানোলা, লরা, মিউজিকা, ক্যারেজ, রোমানা ও ফাটা পাকরি চাষ করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়েছে রংপুরে এবং সবচেয়ে কম লালমনিরহাট জেলায়। মার্চ মাসের শেষের দিকে আলু উত্তোলন শেষ হবে বলে জানান কৃষি বিভাগ।
এ বছর রংপুর জেলায় ৫৩ হাজার ৯৩০ হেক্টর, নীলফামারী জেলায় ২১ হাজার ৯৯০ হেক্টর, গাইবান্ধা জেলায় ১১ হাজার ১৫২ হেক্টর, কুড়িগ্রাম জেলায় ৭ হাজার ৭৫ হেক্টর ও লালমনিরহাট জেলায় ৬ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান,  জেলায় শৈত্যপ্রবাহ চলছে। ঘন কুয়াশা থাকলে আলুর মধ্যে লেট ব্লাইট হতে পারে। আমরা কৃষকদের পরিমিত ছত্রাক নাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি।
(ঢাকা টাইমস/২৪জানুয়ারি/এসএ)