কুড়িগ্রামের উলিপুরে সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:০৯ | আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯:৫০

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রচলিত পদ্ধতি বাদ দিয়ে  সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এ পদ্ধতির ফলে ধান চাষে শ্রমিক সংকট নিরসন, উৎপাদন খরচ ও সময় বাঁচবে বলে জানা গেছে।

চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে প্রাথমিকভাবে উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের মধুপুর বামনের হাট এলাকায় প্রায় ৩৫ শতক জমিতে ৪ হাজার ৫০০ প্লাস্টিকের ট্রেতে ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। সমলয় পদ্ধতিতে বীজতলা ও চারা রোপণের বিষয়টি এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশেষ কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে বেলে মাটিতে জৈব সার সংমিশ্রণে প্লাস্টিকের ট্রেতে ধান বীজ বপন করা হয়। ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে এই বীজ চারা রোপণের জন্য উপযোগী হয়ে ওঠে। এতে বাড়তি সারের প্রয়োজন হয় না। ট্রেতে চারা উৎপাদনে জমির পরিমাণও কম লাগে। রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার মেশিন দিয়ে চারা একই গভীরতায় সমানভাবে লাগানো যায়। ফলে ফলনও বাড়ে। একসঙ্গে চারা রোপণ করায় ধান একসঙ্গে পাকবে এবং একসঙ্গে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা।

কৃষি বিভাগ জানায়, প্রচলিত পদ্ধতিতে চারা রোপণের পর ফসল ঘরে তুলতে ১৪৫ থেকে ১৬০ দিন সময় লাগলেও সমলয় পদ্ধতিতে অনেকে সময় কম লাগে।

বামনের হাট এলাকার বর্গাচাষি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আগে জমি তৈরি করে ধানের বীজ লাগাইছিলাম। এবার মেশিনের সাহায্যে ট্রেতে বীজ তলা তৈরি করা হয়েছে। এভাবে কখনও আবাদ করিনি। কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী ১২০ শতক জমিতে সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষের প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করি ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

একই এলাকার কৃষক চন্দন সরকার (৫১) ও অমরেন্দ্র নাথ (৬৩) জানান, সমলয় পদ্ধতিতে বীজ বপন করেছি। খরচ নেই বললেই চলে। সারের ব্যবহার করা হয়নি। এত শীতের মধ্যেও বীজতলার কোনো ক্ষতি হয়নি। আশা করি এ পদ্ধতির মাধ্যমে চাষাবাদ করলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

ধরণীবাড়ী ইউনিয়ন ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, ৯০ জন কৃষক ৫০ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতির মাধ্যমে চাষাবাদের জন্য অন্তর্ভুক্তি হয়েছেন। এতে শ্রমিক লাগবে না। সবকিছু যন্ত্রের মাধ্যমে হবে। এ ছাড়া দ্রুত উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন তারা। সমলয় পদ্ধতি চাষাবাদে কৃষকরা লাভজনক হবে বলেও আশা করেন তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে এসব চারা রোপণ করা হবে। ধান কাটা-মাড়াই সবই হবে কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্রের মাধ্যমে। এতে করে শ্রমিক সংকট নিরসন হবে। সেই সঙ্গে কম সময়ের মধ্যে ফসল ঘরে তুলতে পারবে। সমলয় পদ্ধতির ফলে ক্ষেতে রোগবালাই কম হবে বলেও জানান তিনি।

মোশারফ হোসেন আরো জানান, আগামী ২৭ জানুয়ারি সমলয় পদ্ধতিতে চারা রোপণ করা হবে। ওই সময় ২০০ কৃষককে নিয়ে সমলয় পদ্ধতি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত অবগত করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৫জানুয়ারি/প্রতিনিধি/পিএস