দেশেই তৈরি হচ্ছে ডেঙ্গুর কিট 

প্রকাশ | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪৮ | আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৫০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য এবার দেশেই তৈরি হচ্ছে কিট, যা দিয়ে ১০ মিনিটেই ডেঙ্গু শনাক্ত করা যাবে। আর এতে খরচও নেমে আসবে অর্ধেকে। এই কিট শতভাগ সঠিক তথ্য দিতে সক্ষম বলে দাবি গবেষকদের। বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম) এরই মধ্যে অ্যান্টিজেন কিটটি তৈরির অনুমোদন পেয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক মালা খান জানান, প্রায় আড়াই বছর গবেষণার পর সফলতা এসেছে। তিনি বলেন, “এরই মধ্যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করা হয়েছে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ১০০ জনের ওপর এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে, যেখানে শতভাগ সফলতাও এসেছে।”

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, গবেষণা ও পরীক্ষার প্রতিষ্ঠিত নিয়ম মেনেই প্রতিটি ধাপ এগিয়ে নেয়া হয়েছে। সব তথ্য পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল-বিএমআরসির অনুমোদন মেলে।

গত ১৬ জানুয়ারি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) উৎপাদনের অনুমোদন দেয়। এখন বিআরআইসিএম ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট তৈরি শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানটির গবেষকরা জানান, এই কিট ৪ ডিগ্রি থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় দুই বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে, যা বাজারে পাওয়া অন্য কিটগুলোর তুলনায় এগিয়ে। 

গবেষক দলের সদস্য মাহমুদুল হাসান বলেন, “এই কিটে সিরাম, প্লাজমা ও রক্তের মাধ্যমে ফলাফল জানা যাবে। পাশাপাশি ডেঙ্গুর ধরন ‘ডেন-৪’ এই কিটে শনাক্ত করা যাবে।”

মালা খান জানান, বর্তমানে দেশে যেসব কিট ব্যবহার করা হচ্ছে তা শতভাগ আমদানি করা। যার জন্য ১৪০ থেকে ১৯৫ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। দেশে তৈরি এই কিটে খরচ হবে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আর ১০ মিনিটেই ফলাফল পাওয়ার কারণে বেশি বেশি পরীক্ষা করা যাবে। 
প্রতিদিন এক লাখ কিট উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এটি বিদেশনির্ভরতা কমাবে। পাশাপাশি সংরক্ষণ করা সহজ হওয়ার কারণে রপ্তানিও করা যাবে। তবে দেশের বাইরে রপ্তানি করতে গেলে আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়।”

বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, করোনা হলেও পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে ‘ক্রোস রিএক্টিভিটি’ বলা হয়, দেশে তৈরি এই কিটে তা হবে না বলে দাবি গবেষকদের। তারা বলছেন, করোনা, জিকা ও চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের প্রভাব থাকলেও ডেঙ্গুর ফলাফল শতভাগ দেবে। অর্থাৎ এখানে ‘ক্রস রিঅ্যাক্টিভিটি’ নেই। পাশাপাশি এই অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ফলস নেগেটিভ বা ফলস পজেটিভ আসারও সুযোগ নেই বলে দাবি গবেষকদের।

ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে কিট আমদানি করা হয়। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর দামের উঠানামা করে। আবার অনেক সময় পাওয়া যায় না, গেল বছর এমন সমস্যার কারণে বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তের পরীক্ষা বন্ধ ছিল। নিজেরা এমন কিট তৈরি করতে পারলে সেই সমস্যার দূর হবে।


(ঢাকাটাইমস/০২ফেব্রুয়ারি/এফএ)