গণস্বাস্থ্যে চালু হলো দেশের প্রথম ক্যানসার প্রতিরোধ বিভাগ

প্রকাশ | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:২৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতাল প্রকল্পের অধীনে দেশের প্রথম প্রিভেন্টিভ অনকোলজি (ক্যানসার প্রতিরোধ) বিভাগ চালু হয়েছে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে। প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে হাসপাতালটির ষষ্ঠ তলায় এই বিভাগের কার্যক্রম আগামী শনিবার থেকে পুরোপুরি চালু হবে।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালে প্রতিরোধ বিভাগ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাসপাতালের প্রকল্প সমন্বয়কারী ও প্রিভেন্টিভ অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, ‘নতুন চালু হওয়া ক্যানসার প্রতিরোধ বিভাগে রোগীরা সামর্থ্য অনুযায়ী চিকিৎসা ফি দিয়ে সেবা নিতে পারবেন।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র চ্যারিটেবল ট্রাস্টের চেয়ারপারসন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা বলেন, ‘জাফরুল্লাহ ভাই সমাজের জন্যই জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। তার শেষ জীবনে তিনটি বড় স্বপ্ন ছিল। মৃত্যুর পর আমরা তার একটা স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছি। দ্বিতীয় ইচ্ছা কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন। সেটার কার্যক্রমও কিছু দিনের মধ্যে শুরু হবে। তৃতীয় স্বপ্ন ছিল হার্টের ট্রান্সপ্লান্ট। সেটাও আমরা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করবো।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরিন হক বলেন, ‘আজকে আনন্দের দিন। জাফরুল্লাহর খুব স্বপ্ন ছিল একটা পূর্ণাঙ্গ ক্যানসার হসপিটাল হবে, যেখানে মানুষ সুলভে চিকিৎসা সেবা পাবেন। এখন তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন হচ্ছে।’

জানা গেছে, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্রকে তিনটি ধাপে পূর্ণাঙ্গ ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। প্রথম ধাপে গণস্বাস্থ্যের ধানমন্ডি নগর হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসার বিদ্যমান সুবিধা (সপ্তম তলায় ব্র্যাকিথেরাপি ও কেমোথেরাপির ডে- কেয়ার সেন্টার, বিদ্যমান জনবল) আত্তীকরণ করে এর সঙ্গে ষষ্ঠ তলায় ক্যান্সার ওপিডি ও ক্যান্সার প্রতিরোধ বিভাগ যুক্ত করে ক্যানসার হাসপাতালের ইউনিট-১ গড়ে উঠবে একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে।

ভর্তি গওয়া রোগীর চিকিৎসা হবে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের আওতায়। ২০২৪ সালের মধ্যে এই ইউনিট ও নগর হাসপাতালের সমন্বয়ে কেবলমাত্র বিকিরণ চিকিৎসার টেলিথেরাপি (লিনিয়ার এক্সিলারেটর) ছাড়া ক্যানসারের সকল সেবা চালু হবে।

ইউনিট -২ চালু হবে মিরপুরের পল্লবীতে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের চার-পাঁচটি ফ্লোর নিয়ে। ২০২৪ সালের মধ্যে এখানে ওপিডি, ক্যানসার স্ক্রিনিং ও দূর-দূরান্তের ক্যানসার রোগীদের স্বল্প খরচে থাকা- খাওয়ার সুবিধাসহ গণস্বাস্থ্য ক্যানসার নিবাস চালু হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে ইনডোর, ডে-কেয়ার ও ওটি চালু করা হবে। একটি লিনিয়ার এক্সিলারেটর মেশিন বসানোর সম্ভব্যতা যাচাই করা হবে।

তৃতীয় ও শেষ ধাপে ২০২৭ সালের মধ্যে সাভারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধিগ্রহণকৃত স্থানে চার-পাঁচটি রেডিওথেরাপি মেশিন, ওটি কমপ্লেক্স, কেমোথেরাপির জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত ক্যানসার হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে।

দূর-দূরান্তের রোগীদের স্বল্প খরচে থাকা-খাওয়ার জন্য ডরমিটরি থাকবে। গণস্বাস্থ্যের সকল স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে টেলিমেডিসিন নির্ভর সমাজভিত্তিক প্রাথমিক ক্যানসার সেবা চালু করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৬ফেব্রুয়ারি/এজে)