মোহাম্মদপুরে গৃহকর্মীর মৃত্যু: সাংবাদিক দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:৫৯ | আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:০২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

মোহাম্মদপুরে গৃহকর্মীকে বিবস্ত্র অবস্থায় আটতলা থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ ওঠা একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকের নির্বাহী সম্পাদক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। 

আজ বুধবার নিহত গৃহকর্মী প্রীতির বাবা লুকেশ উড়ান বাদী হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহফুজুল হক ভূঞা ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আদালতে আটক দুইজনের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।” 

এর আগে মঙ্গলবার সকালে শাজাহান রোডের একটি বাসার নিচ থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় ১২ বছর বয়সী গৃহকর্মী প্রীতির মরদেহ পাওয়া যায়, যা ওই বাড়ির আটতলা থেকে নিচে পড়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় বাড়ির গৃহকর্তা ও তার স্ত্রীকে আটক করে পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেয়। পরে নিহত প্রীতির বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে সেই মামলায় এই দম্পতিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে আদালতে পাঠানো হয়।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঞা বলেন, “অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে ৩০৪/ক ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে। বাদী নিহতের বাবা।”

জানা যায়, শাজাহান রোডের ২/৭ নম্বর বাড়ির নিচ থেকে প্রীতি নামে ওই গৃহকর্মীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, প্রীতির মরদেহ ওই বাসার নিচে পড়ে ছিল। পরে লোকজন দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়৷ পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

জানা গেছে, নিহত প্রীতির গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারে। সম্প্রতি সে ওই ভবনের আটতলায় কাজ শুরু করেছিল।

থানা পুলিশ জানিয়েছে, এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট ইংরেজি দৈনিকের এই নির্বাহী সম্পাদকের বাসা থেকে ফেরদৌসী নামে এক গৃহকর্মীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ফেরদৌসীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেও ৪ আগস্ট বাসাটির আটতলা থেকে নিচে পড়েছিল বলে দাবি করেছিলেন গৃহকর্তা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটি যৌনাঙ্গে আঘাত পাওয়ায় তার একটি অপারেশনও করেন চিকিৎসকরা। তবে শরীরের অন্য কোথায় তেমন আঘাত ছিল না। ফলে ফেরদৌসীর আটতলা থেকে পড়ে যাওয়ার দাবিটি রহস্যময় ছিল।


এ ঘটনায় পরে শিশুটির মা জোসনা বেগম বাদী হয়ে তিনজনের নামে একটি মামলা করেন। মামলার আসামি হন ইংরেজি দৈনিকের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক, তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার ও আসমা আক্তার শিল্পী। তখন এই মামলায় ফেরদৌসীকে ওই বাসায় এনে দেওয়ার জন্য শিল্পীকে মামলার আসামি করা হয়েছিল।

এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সাত মাসের মাথায় প্রীতিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করলো পুলিশ।

স্থানীয়দের দাবি, গৃহকর্তাসহ বাসাটির লোকজন গৃহকর্মীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন করেন।

(ঢাকাটাইমস/০৭ফেব্রুয়ারি/এসএস/এফএ)