চুল পড়া ম্যাজিকের মতো কমায় যেসব খাবার, বাড়ায় জেল্লা
প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২০:১৭
চুল পড়ার সমস্যা প্রত্যেকেরই কম-বেশি রয়েছে। কেউ এই সমস্যা নিয়ে জর্জরিত হন, আবার কারও চুল অনেকটাই রুক্ষ এবং শুষ্ক হয়। রেশমের মতো নরম ও সুন্দর চুল তাদের কাছে স্বপ্ন। চুলের প্রতি অযত্ন, ধুলা, দূষণ এবং রোদের কারণে দিনের পর দিন চুলের এমন খারাপ অবস্থা হয়।
তবে এগুলো ছাড়াও চুল পড়া বা রুক্ষ হওয়ার অন্যান্য কারণও থাকতে পারে। যেমন, খারাপ এবং অস্বাস্থ্যকর ডায়েট চুল পড়ার অন্যতম কারণ হতে পারেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। চুল পড়া বন্ধের জন্য চুলের যত্ন করতে হবে, পাশাপাশি ডায়েটেও নজর দিতে হবে।
এমন কিছু খাবার আপনার প্রতিদিনকার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন, যা আপনার চুল পড়া বন্ধ করতে পারে ম্যাজিকের মতো, বাড়াতে পারে চুলের জেল্লাও। এরকম পাঁচটি খাবারের সন্ধান দিচ্ছে ঢাকা টাইমস, যা চুল পড়া কমিয়ে চুলের জেল্লা বাড়াতে পারে।
মাছ
মাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব মলিকিউলার সায়েন্সে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, মাছের তেলে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।
অন্য একটি গবেষণায় দেখা যায়, ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্টে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। চুল সহজেই পাতলা হয়ে যায় না।
ডিম
ডিমের মধ্যে এমন কিছু উপাদান থাকে, যার মধ্যে নানা ভিটামিন থাকে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল থাকে, যা আপনার চুলের ফলিকলকে মজবুত করতে সাহায্য করে। চুল মজবুত করে। চুলের জেল্লাও হয় দেখার মতো।
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে উল্লেখ করা হয় যে, প্রোটিনে উপস্থিত সালফার অ্যামিনো অ্য়াসিড চুলের জন্য ভালো। এটি আপনার চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করতেও পারে।
বায়োটিনের ঘাটতি হলে অনেক মহিলার চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে। ডিমের মধ্যে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৮, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। চুল পড়াও নিয়ন্ত্রণ করে।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ট্রিকোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, বায়োটিনের ঘাটতিতে চুল পড়া বাড়তে পারে। প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খেতে পারেন এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে।
আমন্ড
আমন্ডে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম, প্রোটিন, আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ম্যাগনেশিয়াম চুলের ফলিকল মজবুত করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৩-৪টি আমন্ড ভিজিয়ে রাখুন। ভিজিয়ে রাখা আমন্ড খান। যা আপনার চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। চুলের বৃদ্ধিও হয় দেখার মতো।
পালং শাক
পালং শাকে থাকে ক্যালশিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ফলিক অ্যাসিড এবং গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন। যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই চুল পড়াও নিয়ন্ত্রণ হয়।
পালং শাকে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে, এই উপাদান আপনার স্ক্যাল্পে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই চুলের গোড়াও মজবুত হয়। সহজেই চুল উঠে আসে না। পালং শাক খেতে পারেন। সিদ্ধ করে খাওয়া যায়। পালং শাকের রসও খেতে পারেন।
গাজর
গাজরে আছে ভিটামিন এ, সি এবং পটাশিয়াম। এই প্রতিটি উপাদানই চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ‘এ’-এর ঘাটতি হলে তার প্রভাব পড়ে চুলেও। শুষ্ক হয়ে যায়। স্ক্যাল্প প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হারানোর কারণে অতিরিক্ত পরিমাণে চুল উঠতে থাকে।
তাই প্রতিদিনকার ডায়েটে যদি গাজর গ্রহণ করতে পারেন, তবে আপনার শরীরে ভিটামিন এ-এর ঘাটতি পূরণ হয়। উপরের সবকটি খাবারই সহজলভ্য। চুলের সমস্যা সমাধান ছাড়াও এসব খাবার শরীরের অন্যান্য দিক থেকেও দারুণ উপকারী।
(ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/এজে)