সংরক্ষিত আসনে মনোনীতদের লক্ষ্য

নারীদের এগিয়ে নিতে সংসদে লড়বেন তারা

প্রকাশ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:০৭ | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:১১

জাফর আহমেদ, ঢাকা টাইমস

দেশের মধ্যে পিছিয়ে পড়া ব্যক্তিদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে দেশকে এগিয়ে নিতে সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চান আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনীতরা। 

ঢাকা টাইমসের কাছে এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা। 

ঢাকা টাইমস তাদের কাছে জানতে চেয়েছিল সমাজ উন্নয়নে  নারীদের এগিয়ে নেওয়া, অধিকার নিশ্চিতে সংসদে কী ভূমিকা রাখবে? পাশাপাশি সংরক্ষিত আসনের মনোনীতদের অনুভূতিও জানতে চাওয়া হয়েছে। শুধু আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরাও নয় ঢাকা টাইমসের কথা বলেছেন বিরোধী দলের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীর সঙ্গে। 

৪৮ সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য পদে নানা শ্রেণি-পেশার সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি দলের ত্যাগী নেতানেত্রীদেরও মূল্যায়ন করেছে আওয়ামী লীগ। দলের মনোনয়ন পাওয়াদের ৩৪ জনই এবার নতুন মুখ। 

জাতীয় নির্বাচনে জয়ী না হওয়া এবং মনোনয়ন পেয়েও বাদ পড়া চারজনও আছেন সংরক্ষিত তালিকায়। আর একজন আছেন সাংবাদিক। নারীর অধিকার নিশ্চিত করা, পিছিয়ে পড়া নারী ও এলাকার উন্নয়নের কাজে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি দেশে অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে চান তারা। 

দলের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতা কর্মীদের জন্যেও ছিল বিশেষ মূল্যায়ন। সাংবাদিকদের একজন প্রতিনিধিও আছেন এবারের সংরক্ষিত আসনে। মুক্তিযোদ্ধাসহ সব শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়েছে মনোনয়নে। 

আগের সংসদের ৭ জন এবারো মনোনয়ন পেয়েছেন। তারা হলেন, ওয়াসিকা আয়শা খান, ফরিদা খানম, অপরাজিতা হক, নাহিদ ইজাহার খান, শবনম জাহান, অ্যারোমা দত্ত এবং ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা। 

তবে এবার বেশ আলোচনায় থাকলেও বিনোদন অঙ্গনের কাউকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। বিনোদন জগতের ১৫ জনের বেশি নারী এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন।  

তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আগেই বলেছিলেন, ‘উড়ে এসে জুড়ে বসবে এমন কাউকে আওয়ামী লীগ সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেবে না। দলের মধ্যে যাদের জনপ্রিয়তা আছে তাদেরকে দল মনোনীত করেছেন। দেড় হাজারের বেশি আগ্রহীর মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।’

সংসদের বিরোধী দলের সংরক্ষিত আসনে মনোনীত হওয়া সালমা ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি মানুষের জন্য কাজ করি। বিশেষ করে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ তথা পিছিয়ে পড়া মহিলাদের জন্য। সংরক্ষিত আসনে মনোনীত হয়ে এমপি হলে মানুষের জন্য কাজ করার দায়িত্ব আরও বাড়বে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংসদে যাওয়া, মানুষের জন্য দাবি দিয়ে কথা বলা এটা অন্যরকম অনুভূতি। আমি আমার নির্বাচনি এলাকার মানুষের জন্য, মহিলাদের এগিয়ে নিতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছি। সংসদে গেলে মানুষের জন্য বড় পরিসরে কাজ করার সুযোগ থাকে।’

আওয়ামী লীগ থেকে সংরক্ষিত আসনে মনোনীত হওয়া দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আমাকে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনীত করছেন এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। সংসদ সদস্য হয়ে মানুষের জন্য কাজ করবো, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে কাজ করবো এই অনুভূতি বলে বুঝানোর মতো ভাষা আমার নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন সেই আস্থার মান আমি রাখতে চেষ্টা করবো।’ 

আরেক মনোনীত প্রার্থী আরমা দত্ত ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের হয়ে একজন এমপি হওয়া এটা আমার একটা বড় পাওয়া, গর্বের। দল আমাকে যে মনোনীত করেছে সেই আস্থার প্রতিদান আমি দেব। এছাড়া আমার ৫ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। তাই কোন কোন জায়গায় দাবি দিয়ে কাজ করতে হয়, সেটা আমার জানা আছে। নারীদের এগিয়ে নিতে সবার সঙ্গে সমন¦য় করে কাজ করবো। বিশেষ করে সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করবো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করে নতুন প্রজন্মকে নিয়ে কাজ করবো। বিশেষ করে নারীরা যেন দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে এবং যারা কাজ করছে তারা যেন আরও এগিয়ে  যেতে পারে সেই কাজ করবো। কোনো দেশই নারী ও পুরুষের ভূমিকা ছাড়া এগিয়ে যেতে পারে না। তাই নারীদের কর্মমূূখী করা, দক্ষ করে গড়ে তোলার কাজে গুরুত্ব থাকবে বেশি। নারীরা কেন পিছিয়ে আছে, সেই গ্যাপগুলো চিহ্নিত করে নারীদের এগিয়ে নিতে কাজ করবো। আমার চাওয়া নতুন প্রজন্ম যেন এগিয়ে যেতে পারে, সেটা নিয়ে কাজ করবো।’


ঢাকায় সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া শবনম জাহান শিলা ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার অনুভূতি বলে বুঝানোর মতো না। আমাকে যেহেতু দল থেকে মনোনীত করা হয়েছে এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি বিভিন্ন শ্রেণির পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিয়ে কাজ করেছি এবং মানুষদের নিয়ে এনজিওতেও কাজ করেছি। তাই সেসব জায়গায় থেকে সমাজ উন্নয়ন,দেশ উন্নয়ন, জাতির উন্নয়নে কাজ করবো। দেশ অর্থনৈতিকভাবে সফল হবে সেই কাজ করবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে  সেভাবেই কাজ করবো। 

(ঢাকাটাইমস/১৮ফেব্রুয়ারি)