মাকে রোজার ইফতার সামগ্রী কিনে দেওয়া হলো না জিহাদের

প্রকাশ | ০২ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৭ | আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪, ১২:৪২

মাদারীপুর প্রতি‌নি‌ধি, ঢাকা টাইমস

রোজায় মাকে ইফতার সামগ্রী কিনে দেওয়া হলো না জিহাদ শিকদারের। মায়ের সঙ্গে শেষ কথা হয় বৃহস্পতিবার দুপুরে, আর শুক্রবার দুপুরে আসে জিহাদের মরদেহ। রাজধানীর বেইলি রোডে আগুন লেগে মারা যায় মাদারীপুরের কালকিনির সন্তান জিহাদ। তিনি কাচ্চি ভাইয়ের রেস্টুরেন্টে সার্ভিস বয় হিসেবে কাজ করতো। তার মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবার।
পরিবারের হাল ধরতে তিন বছর আগে রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাইয়ের রেস্টুরেন্টে শ্রমিক হিসেবে কাজে যোগ দেয় জিহাদ শিকদার। তার উপার্জিত বেতন দিয়ে চলতো গ্রামের বাড়ির সংসার। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রেস্টুরেন্টে কাজ করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মারা যায় জিহাদ। শুক্রবার দুপুরে জিহাদ শিকদারের মরদেহ কালকিনি উপজেলার কয়ারিয়া ইউনিয়নের আলিমাবাদ গ্রামে আসলে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জিহাদের অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে সরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
২০২০ সালে মোল্লারহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে ঢাকায় আসে জিহাদ। এরপর সাহেবরামপুর কবি নজরুল ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়ে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থীও ছিলেন জিহাদ। তার এমন অকাল মৃত্যুতে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা।
মা র‌হিমা বেগম ব‌লেন, ‘আমার পোলা এবার রোজায় ইফতা‌রি কিনে দি‌তে পার‌লো না। সে আমা‌কে ফো‌নে বল‌লো মা ক‌য়েক‌দিন প‌রে বেতন পাইয়া ইফতা‌রির জ‌ন্যে টাকা পাঠা‌বো, সেটা আর হ‌লো না।’
নিহত জিহাদের ছোটভাই রিয়াদ জানায়, মাদারীপুরের কালকিনির সাহেববারপুর কবি নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজে মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো জিহাদ। জিহাদের সংসারে মা-বাবা ও এক ভাই রয়েছে। বড় বোনের বিয়ে হওয়ায় সে থাকে তার স্বামীর বাড়িতে।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ জানান, জিহাদের মৃত্যুতে সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই। তার পরিবার থেকে কোনো সহযোগিতা চাওয়া হলে সবসময় পাশে থাকবে উপজেলা প্রশাসন।
সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছে অসহায় পরিবারটি। সেই সাথে দোষীদের বিচারেরও দাবি তাদের। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই নামে একটি রেস্টুরেন্টে আগুনের ঘটনায় মারা যান ৪৬ জন। এই দুর্ঘটনায় মারা যায় জিহাদ শিকদার।


(ঢাকা টাইমস/০২মার্চ/প্রতিনিধি/এসএ)