পর্যটনে নতুন দুয়ার খুলে দিতে পারে শেরপুরের দাওধারা

পর্যটনের নতুন দ্বার খুলে দিতে পারে প্রাকৃতিক শোভায় ভরপুর শেরপুরের সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার দাওধারা গারো পাহাড়। জেলায় যে দুটি পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে সেগুলোর চেয়ে দেওধারার উঁচু নিচু লাল পাহাড়ের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করে ভ্রমণপিয়াসীরা উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত হবেন বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
তাই এর স্থগিত হওয়া বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনায় দেশের পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে নতুন বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে শেরপুর জেলা প্রশাসন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের দাওধারা কাটাবাড়ি পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৬৬৩ বিঘা পাহাড়ি বনভূমি নিয়ে নতুন একটি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী স্থান নির্বাচন করে গত বছরের ৫ এপ্রিল তৎকালীন জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার ওই স্থানে নির্মাণকাজের উদ্বোধন উপলক্ষে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একইসঙ্গে ওই পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তায় মাটি কাটার কাজ ও একটি গেট নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল দুজনেই বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকে থমকে যায় ওই পর্যটন কেন্দ্রের চলমান কাজ।
এলাকাবাসী জানান, এখানে নতুন একটি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসবেন। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়দের জন্য সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থান। তাই ওই এলাকায় থমকে যাওয়া পর্যটন কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
ওই এলাকার বাসিন্দা হারেজ আলী বলেন, আমাদের পূর্বদিকে আছে নাকুগাঁও স্থলবন্দর ও পশ্চিমে আছে মধুটিলা ইকোপার্ক। আমরা এর মাঝখানের এলাকার বাসিন্দা। এখানকার মানুষের নেই কোনো কর্মসংস্থান। তাই এখানে নতুন পর্যটন কেন্দ্রটি স্থাপন করা হলে তরুণ-তরুণীসহ আপামর জনসাধারণ কর্মসংস্থানের পথ খুঁজে পাবে।
আরেক বাসিন্দা রাশিদা বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ আমাদের চলার কোনো পথ নেই। আমরা এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বন থেকে লাকড়ি কুড়িয়ে বিক্রি করে কষ্ট করে সংসার চালাই। দাওধারা গারো পাহাড়ে যদি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হয় তাহলে আমরা অন্তত পানি বিক্রি করে হলেও আমাদের সংসার চালাতে পারবো।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিশায় রিছিল বলেন, দাওধারা গারো পাহাড়ের প্রায় ৬৬৩ একর খাস জমি উদ্ধার করে নতুন পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়েছে। এরমধ্যে কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখে বাকি কাজ করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।
(ঢাকাটাইমস/০৩মার্চ/প্রতিনিধি/পিএস)

মন্তব্য করুন