‘লাভের’ ফসলে দাম কম, হতাশ কৃষক

নওগাঁর নিয়ামতপুরে ফুলে ফুলে শর্ষেখেত ভরে উঠলেও ফলন ও দাম কম হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তবে উপজেলা কৃষি অফিস বলছে ফলন আশানুরূপ হয়েছে। উপজেলায় গতবছর থেকে কৃষকেরা আমন আর বোরো ধানের মাঝখানে শর্ষে রোপণ করছেন।
কৃষকেরা বলছেন, এ বছর তাপমাত্রার তারতম্য ও অসময়ের বৃষ্টিতে গাছ ঘন হয়ে যাওয়ায় ফুল তাড়াতাড়ি ঝরে পড়েছিল। এসব কারণে ফলন কম হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।
সম্প্রতি উপজেলার ভাবিচা, রামনগর, সাবিলপুর, ডিমা, চৌরাপাড়াসহ আরও কয়েকটি খেত ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। বেশিরভাগ কৃষক জানিয়েছেন গতবছরের চাইতে এবার ফলন কম।
উপজেলার সাবিলপুর গ্রামের কৃষক মো. ইকবাল জাবিদ এবার সোয়া চার বিঘা জমিতে শর্ষের চাষ করেছেন। খেত থেকে তিনি শর্ষে উঠিয়ে মাড়াই করেছেন।
ইকবাল জাবিদ বলেন, এবার শর্ষের ফুল ভালো হয়েছিল, কিন্তু ফুল তাড়াতাড়ি ঝরে গিয়েছিল। শস্য ঠিকমতো দানা বাঁধেনি। গত বছর সোয়া চার বিঘা জমিতে প্রায় ৪১ মণ শর্ষে হয়েছিল। এবার সেখানে ৩১ মণ পেয়েছেন।
ধানসা গ্রামের কৃষক রনজিত মিনজ বলেন, গত বছর দেড় বিঘা জমিতে ১২ মণ শর্ষে পেয়েছিলাম। এবার ৭ মণ পেয়েছি।
ঝলঝলিয়া গ্রামের কৃষক মো. শামসুল বলেন, গত বছর ৪ বিঘা জমিতে ৩২ মণ শর্ষে পেয়েছিলাম। এবার পেয়েছি ২৪ মণ।
তবে ভাবিচা গ্রামের কৃষক উজ্জ্বল সরকার এক বিঘা জমিতে ১০ মণ শর্ষে পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার নিয়ামতপুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমণ শর্ষে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। অথচ গত বছর প্রতি মণ শর্ষে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে সরিষা চাষের গড় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ হাজার ২৯২ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে। গত বছর উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বেশি জমিতে শর্ষে চাষ হয়েছে এবার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, শর্ষে কাটা-মাড়াই প্রায় শেষের দিকে। গত বছরের মতো এবারও শর্ষের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। শর্ষে আগাম লাগালে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। তাই আমনে মৌসুমে স্বল্প জীবনকালের ধান রোপণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/৩মার্চ/এআর)

মন্তব্য করুন