ঢাকা টাইমস একান্ত
নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই
নারীদের এগিয়ে নিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন আর নারীরা সমাজে অবহেলিত নয়, পিছিয়ে নেই, সর্বক্ষেত্রেই নারীরা এগিয়ে। নারীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী যা করেছেন তা ইতিহাসে বিরল।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে তিনি বলেন, যেকোনো ক্ষেত্রে নিজেদের বিষয় নিজেরই শুরু করতে হয়। নারীদের ক্ষেত্রে একই। বৈষম্য দূর করার জন্য নারীকেই আগে পদক্ষেপ নিতে হবে। কারও ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের অধিকার নিয়ে নিজেকে জাগ্রত করতে হবে।
দুঃসময়ে ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেওয়া শিলু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক উপকমিটি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চট্টগ্রামস্থ পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান তিনি। তার স্বামী সাবেক পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জাকসুর সাবেক ভিপি একেএম এনামুল হক শামীম।
তাহমিনা খাতুন শিলু মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পাশাপাশি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের ফাইন্যান্স বিভাগের অতিরিক্ত জিএম ও ডিজিটাল সার্ভিসের জিএম পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
ঢাকা টাইমসকে মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শিলু বলেন, ‘আমার বড় দুই ভাই ছাত্রলীগ করতেন। সেই সুবাদে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ সম্পর্কে জেনে তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে ছাত্রলীগে জড়িত হই। ১৯৯৭ সালের শেষের দিকে এসে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার পরও সংসার-চাকরি সবকিছু করছি। কিন্তু রাজনীতি থেকে কখনো বিন্দু পরিমাণ দূরে থাকিনি।’
তিনি বলেন, ‘যেকোনো ক্ষেত্রে নিজেদের বিষয় নিজেদেরই শুরু করতে হয়। নারীদের ক্ষেত্রে একই। বৈষম্য দূর করার জন্য নারীকেই আগে পদক্ষেপ নিতে হবে। আমি কী চাই, আমার অস্তিত্বটা কোথায়, আমি কোথায় যেতে চাই, নিজেকে কতটা জাগ্রত করতে চাই, এ লক্ষটা নারীকে আগে ঠিক করতে হবে। নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রকাশ করতে হলে লক্ষ্য ঠিক রেখে নারীকেই এগিয়ে যেতে হবে। কারও ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের অধিকার নিয়ে নিজেকে আগে জাগ্রত করতে হবে। যাতে সমাজের পুরুষরা ভাবে- হ্যাঁ, নারীর যোগ্যতা অনুযায়ী তার অধিকারটা তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। যেহেতু আমাদের সমাজ এখনো পুরুষ শাসিত; তাই পুরুষরাই পারবে বৈষম্য দূর করে নারীদের সাহস জুগিয়ে জাগ্রত করে যোগ্য স্থানে পৌঁছে দিতে। তাহলে সমাজে আর বৈষম্য থাকবে না।’
‘নারী পিছিয়ে থাকার জন্য এখন আর সমাজ দায়ী নয়’ এমন মন্তব্য করে তাহমিনা খাতুন শিলু বলেন, একটা সময় নারীর পিছিয়ে থাকার জন্য সমাজকে দায়ী করা হলেও এখন আর সমাজ দায়ী নয়। নারীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিয়ে বহু সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করেছেন। আমাদের সমাজ ব্যবস্থাও পরিবর্তন হয়েছে, নারীরা পরিবর্তন হয়েছে, তাই এখন আর সমাজকে দায়ী করা যায় না। এখন আমাদের সমাজও নারীকে সমান অধিকার দিয়েছে। একজন নারীকে বুঝতে হবে তার অধিকার আছে, যোগ্যতা আছে, তার দক্ষতা দিয়েই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মহিলা লীগের এই নেত্রী বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও ভূমিকার কারণে নারীরা এখন এগিয়ে আছে। প্রাইমারি স্কুল, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে মেয়েরা এখন ভালো ফলাফল করে এগিয়ে যাচ্ছে। মেয়েদের আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য সুদমুক্ত শিক্ষাঋণের ব্যবস্থা করার দরকার। পরিবার থেকে ছেলেদের জন্য উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা হলেও মেয়েদের জন্য সেই সুযোগ খুব কম। আমাদের সমাজে মেয়েরা মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পাস করলে বিয়ের যে প্রবণতা আছে, বিনা সুদে শিক্ষাঋণ দিলে সেটা বন্ধ হবে। নিজেদের অবদানের স্বীকৃতি ও নিজেকে জাগ্রত করার মন মানসিকতা সৃষ্টি করলেই, স্মার্ট বাংলাদেশে তারাও স্মার্ট অবদান রাখতে পারবে।
নারীদের অধিকার কতটা নিশ্চিত হয়েছে এই প্রশ্নের জবাবে কর্মজীবী এই নারী বলেন, নারীদের অধিকার সর্বক্ষেত্রে নিশ্চিত হওয়ার পরও নারীরা পরিবারকেন্দ্রিক। পরিবার থেকে যদি নারীদের উৎসাহ প্রদান করা হয়, তাবে তারা খুব দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে পারে।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে এই নারী নেত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নারীদের জন্য যে সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করছেন সেগুলো গ্রহণ করে যথাযথ উপায় ব্যবহার করতে হবে। সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেই ছেলেরা এগিয়ে গেছে। তাই মেয়েদেরও সমানতালে এই সুবিধা গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সবক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব নারী দিবসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী যা করেছেন তা ইতিহাসে বিরল। নারীদের উচ্চ শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নিজেকে স্বাবলম্বী ও বিভিন্ন ব্যবসা উদ্যোক্তা সৃষ্টি হওয়ার জন্য বিনা সুদে নারীদের ঋণের ব্যবস্থা করা অত্যাবশ্যকীয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছেলেদের থেকেও নারীদের সুবিধা বেশি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের নারীদের এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী কোথাও দৃষ্টি দেননি এমন জায়গা খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বর্তমান নারী নেত্রীদের কথা উল্লেখ করে ছাত্রলীগের সাবেক এই নেত্রী বলেন, দেশের সকল তরুণী শিক্ষার্থীসহ ছাত্রলীগের মেয়েদের জন্য আমার একটি বার্তা- সবাইকে সামাজিকতা বজায় রেখে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। বিশৃঙ্খলা পরিহার করতে হবে। স্মার্ট ভেবে কোনো বিশৃঙ্খলা ও ভুল পথে পা বাড়ানো যাবে না। যার যতটুকু সম্মান প্রাপ্য তাকে সেই সম্মান দিতে হবে। স্মার্ট মানে সামাজিকতা বজায় রেখে নিজেকে শিক্ষিত করে, সমাজ গঠনে ভূমিকা রেখে ও লোভ লালসা থেকে বিরত হয়ে সুশৃঙ্খলভাবে নিজেকে সৎ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা।
(ঢাকাটাইমস/৮মার্চ/জেএ/এসআইএস)
মন্তব্য করুন