অবৈধ বিদেশিরা কর্মক্ষেত্র দখল করে রেখেছে: গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২৪, ১৫:০৮ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৪, ১৬:১৫

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

গবেষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক লে. কর্নেল ফেরদৌস আজিজ (অব.) বলেছেন, সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ লাভের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং অনুচ্ছেদ ১৯ অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার লাভের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। তবে বাংলাদেশে গত দেড় দশকে বহু অবৈধ বিদেশি বাংলাদেশে অবৈধভাবে কর্মক্ষেত্র দখল করে রেখেছে।

তিনি বলেন, পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে ১০ লাখের অধিক বিদেশি শ্রমিক ও কর্মচারী বাংলাদেশে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত রয়েছে। ফলশ্রুতিতে এদেশের নাগরিকগণ যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ লাভের অধিকার হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের কনফারেন্স কক্ষে ‘অবৈধ বিদেশি খেদাও আন্দোলন’ (Movement Against Illegal Foreigners) কর্তৃক আয়োজিত ‘তরুণদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব এবং অবৈধ বিদেশিদের প্রভাব’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ফেরদৌস আজিজ বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশে বেকার সমস্যা চরম আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে বর্তমানে বেকারত্বের হার ১২ শতাংশ, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। বেকারত্বের সমস্যা এমন চরম আকার ধারণ করেছে যে, এদেশে নাগরিক কর্মসংস্থান খুঁজতে গিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুবরণ করছে।

গোলটেবিল বৈঠকে মেজর মুজিবুল হক (অব.) বলেন, রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে কর্মরত অবৈধ বিদেশি শ্রমিকরা ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি সমপরিমাণ টাকা এ দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ ২০২০ সালে বাংলাদেশের রেমিটেন্স এসেছে ১৮.৫ বিলিয়ন ডলার, অপরদিকে অবৈধ বিদেশিরা নিয়ে গেছে ১০.২ বিলিয়ন। অর্থাৎ আমাদের বাংলাদেশের শ্রমিকদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্সে অর্ধেকের বেশি অবৈধ বিদেশি কর্মচারীর মাধ্যমে বিদেশে বিশেষ করে ভারতে চলে যাচ্ছে। অবৈধ হওয়ার কারণে তারা ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রদান না করে, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা নিয়ে যাচ্ছে, ফলে একদিকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। অজানা কারণে সরকার সমস্ত অবৈধ শ্রমিক স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

মেজর মুজিবুল হক (অব.) এর সভাপতিত্বে এবং ব্যারিস্টার মেজর (অব.) এম সরোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে ব্যারিস্টার মেজর অবসরপ্রাপ্ত এম সরোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট মো. মহসিন রশিদ প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। 

এ ছাড়াও এ গোলটেবিল আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/এসকে/ইএস)