লালমনিরহাটে সাংবাদিকদের আটকে রাখা সেই এসিল্যান্ডকে স্ট্যান্ড রিলিজ

প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০২৪, ২০:০৭

লালমনিরহাট প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

জমিখারিজ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়ায় আট সাংবাদিককে নিজ কার্যালয়ে আটকে রেখে জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়ার ঘটনায় লালমনিরহাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকারকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ। 
তিনি বলেন, ঘটনার পর বৃহস্পতিবারই তাঁকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। তাঁকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় বদলি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ সংক্রান্ত একটি আদেশ ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসেছে। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে আট সাংবাদিককে আটকে রেখে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল দেয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার। আটকে রাখার প্রায় ৪০ মিনিট পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কার্যালয়ের গেটের তালা খুলে তাদের মুক্ত করেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের অভিযোগ, ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা মানুষজন নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন মর্মে তথ্য সংগ্রহে যান মাইটিভির সাংবাদিক মাহফুজ সাজু। এ সময় ভূমি অফিসের ক্রেডিট চেকিং কাম সায়রাত সহকারী রাশিদুল ইসলাম ওরফে রাসেল সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে ভূমি অফিসের সার্টিফিকেট সরকারি মেহেদী হাসান ও  অফিস সহায়ক ইমদাদুল হক ওই সাংবাদিককে হেনস্তা করেন। পরে খবর পেয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা ভূমি অফিসে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ জানান। এ সময় এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমান অফিসে উপস্থিত হয়ে অফিসের কলাপসেবল গেট তালা মেরে ৮ সাংবাদিককে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে উপস্থিত সাংবাদিকদের জেল দেয়ার প্রস্তুতি নেন। পরে সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহকে বিষয়টি জানানোর পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টিএম মমিন ঘটনাস্থলে আসলে সাংবাদিকদের তালাবদ্ধ অবস্থায় পান। এ ঘটনার প্রতিবাদে সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে জেলা শহরের মিশন মোড়ে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ এসে এসিল্যান্ড আব্দুল্লাহ আল নোমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে সাংবাদিকরা অবরোধ তুলে নেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা বলেন, সাংবাদিকদের আটকে রেখে জেল দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে অপরাধ তিনি করেছেন তার শাস্তি বদলি হতে পারে না। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মত আইনের অপপ্রয়োগ করতে কেউ সাহস না পায়।
প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন স্বপন বলেন, বদলি একটি নিয়মিত প্রশাসনিক প্রক্রিয়া। আমরা এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি। এ দাবি পূরণ না হলে আমরা আবার আন্দোলনে যাবো।
(ঢাকা টাইমস/১৫মার্চ/প্রতিনিধি/এসএ)