বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:১৯ | আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:২৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক।

দায়িত্ব নিয়েই সবার উদ্দেশে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি কোনো অন্যায় আবদার শুনব না। এখানে শ্রম দেওয়া প্রত্যেকটা মানুষকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। আমি আপনাদের বন্ধু-ভাই হয়ে কাজ করতে চাই। প্রশাসনের ক্ষমতা খাটাতে চাই না।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে দায়িত্বগ্রহণ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বিএসএমএমইউর সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ নতুন উপাচার্যের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

দীন মোহাম্মদ বলেন, আপনারা আমাকে দলনেতা হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। আমি সব সময় আপনাদের পাশে চাই। আপনারা নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন, এতেই আমি খুশি। অন্য কোনোভাবে আমাকে খুশি করা যাবে না। যে যেই দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করতে পারবেন তাকেই দায়িত্ব দিতে চাই। আমি চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান পরিবর্তন করতে চাই।

উপাচার্য হিসেবে কোনো বিশেষ পক্ষ নয়, সবাইকে নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছেন সদ্য নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। বলেন, আমি কোনো পক্ষ বা গ্রুপের লোক হব না। আমি সেন্টারে থাকব, প্লাসে-মাইনাসে যাব না।

এসময় দায়িত্বগ্রহণের দিন পাওয়া সংবর্ধনা তার জীবনের শ্রেষ্ঠ বলে জানান তিনি। বলেন, আমি অকল্পনীয় সংবর্ধনা পেয়েছি, যা আমার জীবনে ইতিহাস হয়ে থাকবে। জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন আজ।

কারো উদ্বেগের কোনো কারণ নেই জানিয়ে নতুন উপাচার্য আরও বলেন, আমাকে যেভাবে সংবর্ধনা দিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে তা অবিশ্বাস্য। এটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম দিন। আমাকে নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা অনুভব করবেন না। আমাকে কোনো গ্রুপে যুক্ত করার চেষ্টা করবেন না। যারা ভালো কাজ করবে তারাই আমার লোক।

দীন মোহাম্মদ আরও বলেন, আমার রুমে এসে অপ্রয়োজনীয় সময় ব্যয় করা আমি পছন্দ করব না। আপনারা সবাই অনেক কর্মঠ, কাজের মাধ্যমেই আপনাদের সঙ্গে আমার কথা হবে। আমার অনুরোধ, আমাকে সবাই সহযোগিতা করবেন। আমি আপনাদের মতোই একজন।

এ সময় সাবেক সব উপাচার্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ বলেন, সাবেকদের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। বর্তমান উপাচার্য শারফুদ্দিন সাহেব আমাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন। আমিও তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। তিনি আমার বন্ধু মানুষ। আমরা দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করছি। একই ক্লিনিকে প্র‍্যাকটিস করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন আমার খুবই কাছের বড় ভাই। তিনি এখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীও আমার কাছে বোন। আমরা তিনজন মিলে দেশকে একটা অসাধারণ স্বাস্থ্য খাত উপহার দিতে চাই। আমি অন্যায় করব না। কিন্তু আমার ভুলকে পুঁজি করে আমাকে অনুৎসাহিত করবেন না। আমি সাংবাদিক ভাইদের থেকে এ বিষয়ে সাহায্য চাই।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক ও শিক্ষকদের সমস্যা আমার থেকে ভালো কেউ জানে না। এই বিশ্ববিদ্যালয় সারাদেশের মেডিকেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য শিক্ষক তৈরি করে। এই প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছ থাকে তা নিশ্চিত করব। গবেষণা ছাড়া মেডিকেল শিক্ষা চলতে পারে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী গবেষণায় উৎসাহী। আমরা তার এই সদিচ্ছাকে কাজে লাগাতে চাই। গবেষণার জন্য যা যা প্রয়োজন আমি তা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এনে দিতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা ডা. টিটো বলেন, তিন বছরের দুর্নীতির তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা চাই, ভবিষ্যতে যেন কেউ এমন অন্যায়-অত্যাচার ও দুর্নীতি করার সাহস না করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৮মার্চ/টিআই/ইএস)