অগ্নিনিরাপত্তা নেই সুইট ড্রিমে, তিন দফা চিঠি পেয়েও আমলে নিচ্ছে না হোটেল কর্তৃপক্ষ

প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০২৪, ১০:২০

আহম্মেদ মুন্নী, ঢাকা টাইমস

রাজধানীর বনানীর তিন তারকা হোটেল সুইট ড্রিমে নেই অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা। এখানে আগুন লাগলে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকায় হোটেল কর্তৃপক্ষকে ফায়ার সেফটি প্ল্যান (অগ্নি নিরাপত্তা) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন নিতে তিন দফায় চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। তবে তা পাত্তাই দিচ্ছে না হোটেল কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় আইন অনুযায়ী হোটেলটিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানোর কথা ভাবছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। প্রয়োজনে মামলা করার প্রস্তুতিও রয়েছে সংস্থাটির। 

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, সবশেষ চার মাস আগে সুইট ড্রিমকে ফায়ার সেফটি প্ল্যান বাস্তবায়ন করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অনুমোদন নিতে ৩০ দিন সময় বেঁধে দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। এর আগেও দুটি চিঠি দেওয়া হয় তাদের।
 
আইন অনুযায়ী, তিন দফায় চিঠি পাঠানোর পর ফায়ার সেফটি প্ল্যান বাস্তবায়ন না করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয় এবং অগ্নিনিরাপত্তা বাস্তবায়নে সবশেষ তাগাদা দেওয়া হয়। এর পরেও বাস্তবায়ন না হলে ফায়ার সার্ভিস সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে থাকে। আর সুইট ড্রিম হোটেলের বিষয়ে সেই পথেই হাঁটছে ফায়ার সার্ভিস।

এদিকে নানা অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে হোটেলটির কার্যক্রম বন্ধ করতে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া চিঠিও আমলে নেয়নি হোটেল কর্তৃপক্ষ। এখনো চলছে হোটেলটি। আর সরকারি নির্দেশনা না মানার পরেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বা হোটেলের কার্যক্রম বন্ধ নিশ্চিত না করায় প্রশ্ন উঠেছে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়েও। 

অন্যদিকে ৩০ দিনের সময় দিয়ে হোটেলটিকে ফায়ার সার্ভিস চিঠি দেওয়ার চার মাস পার হলেও পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়নি ফায়ার সার্ভিসও।
 
ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, ফায়ার সেফটি প্ল্যান নিশ্চিত করতে গত বছরের ২৭ নভেম্বর ফায়ার সার্ভিস একটি চিঠি দেয় সুইট ড্রিম হোটেল কর্তৃপক্ষকে। 

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) তাজুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, “আমরা প্রাথমিক অবস্থায় তিনবার চিঠির মাধ্যমে ফায়ার সেফটি প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে বলে থাকি। যদি চিঠির সুপারিশ প্রতিপালন না করে তাহলে সরাসরি মোবাইল কোর্ট বসিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ২০২০ এবং অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন ২০০৩ অনুযায়ী জরিমানা করে পুনরায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে বলি। এতেও যদি কোনো ব্যক্তি বা কোনো প্রতিষ্ঠান বিষয়টি আমলে না নেয়, তাহলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে মামলা করি।”
 
এ বিষয়ে সুইট ড্রিম হোটেলের পরিচালক (অপারেশন) সামসুল আহসান মজুমদার ঢাকা টাইমসকে বলেন, “আমরা আমাদের সব কাজই করছি। সব কাজ চলছে। আমাদের পুরো হোটেলেই কাজ চলমান।”

তবে সরজমিনে সুইট ড্রিম হোটেলে গিয়ে দেখা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের গাইডলাইন অনুযায়ী ফায়ার সেফটি প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হয়নি। অগ্নিঝুঁকি জেনেও কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলছে না হোটেল কর্তৃপক্ষ। আর তিন তারকা মানের একটি হোটেলে এমন অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম চলমান থাকায় নানা প্রশ্ন উঠেছে।  

(ঢাকাটাইমস/২৯মার্চ/এফএ)