ঈদের আনন্দ উপভোগে যমুনার পাড়ে বিনোদন প্রেমীদের ঢল
প্রকাশ | ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৫৪
যান্ত্রিক জীবনে কর্মব্যস্ততার ফাঁকে পরিবার-পরিজন ও প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে ঈদ-উল ফিতরের আনন্দ উপভোগ করতে মেতেছে বিনোদন প্রেমীরা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে তারা ছুটছেন বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। স্থানীয়দের অধিকাংশরাই ভিড় করছেন টাঙ্গাইলের অন্যতম দর্শনীয় স্থান বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাড়ে যমুনা নদীর তীরবর্তী গরিলা বাড়ি এলাকার পাথরঘাটে গড়ে ওঠা বিনোদন কেন্দ্রে।
যমুনা নদীর উপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু ও নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে রেল সেতু দেখতে ছুটে আসছেন টাঙ্গাইলসহ দেশের নানা প্রান্তের বিনোদন প্রেমী মানুষ। এই বিনোদন কেন্দ্রে সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত দেখা মেলায় প্রকৃতির পরিবেশ হয়ে ওঠে মনোরম। ফলে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বেড়েছে আরও দ্বিগুণ।
বঙ্গবন্ধু সেতু ছাড়াও রয়েছে আনন্দ পার্ক, বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট, জাদুঘর, শিশু পার্ক, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল, বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস কপি হাউজ ও বিপণী-বিতান মার্কেট, সুইমিংপুল, হরিণ দেখার দৃশ্য, বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব গোল চত্বর এবং ঔষধি গাছের বাগান।
এছাড়া দর্শনার্থীদের জন্য নৌকা বা ছোট ট্রলারযোগে যমুনা নদী পথে সেতু দেখার ব্যবস্থাও রয়েছে।
এদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে পাথরঘাটে অর্ধশত নৌকা সারিবদ্ধভাবে মাঝিরা সাজিয়ে রেখেছেন দর্শনার্থীদের জন্য। এখানে খেলনা দোকান, ফুসকা দোকান ও ফাস্ট ফুডের দোকানসহ নানা রকম দোকানপাট গড়ে উঠেছে।
ঈদের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন সরেজমিন বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ের পাথরঘাট এলাকায় দেখা যায়- অনেকে যমুনার পাড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সূর্যাস্ত দেখছেন, কেউ তাদের পছন্দের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন।
কেউবা ৫০টাকার বিনিময়ে নৌকা বা ট্রলার দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুকে দেখছেন খুব কাছ থেকে। এছাড়াও পাশেই নির্মাণাধীন রেল সেতুর কাজ দেখছেন। অনেকেই শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলনা কিনে দিচ্ছেন। নিজেরাও কেনাকাটা করছেন।
গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ে ঘুরতে আসা জান্নাতুল আক্তার ও কলি ইসলাম বলেন, ‘সারা বছর আমরা সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকি। ঈদের সময়ের দিনগুলো অন্য সময়ের চাইতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তাই ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করতে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড়ে এসেছি। এখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম দেখা যাচ্ছে। সত্যিই খুব ভালো লাগছে এখানে এসে। প্রতি উৎসবেই ঘুরতে আসব এখানে।
বগুড়ার শেরপুর থেকে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা রানা মণ্ডল বলেন, এর আগে সেতু দেখতে পরিবার নিয়ে আসা হয়নি। এবার যেহেতু লম্বা ছুটি পেয়েছি তাই ঈদ উপলক্ষে ঘুরতে এসেছি। পরিবারের লোকজন এই প্রথম বঙ্গবন্ধু সেতু সরাসরি দেখতে পেল। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। বাচ্চারাও অনেক আনন্দ উল্লাস করছে এখানে আসতে পেরে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষক হাসান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ হওয়ার পর থেকে এ সেতু দেখতে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসে। বর্তমানে আরেকটি যুক্ত হয়েছে সেটি হলো নির্মাণাধীন রেল সেতু। টাঙ্গাইলে তেমন কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকাকে বেছে নেন বিনোদন প্রেমীরা। তবে, বিনোদন কেন্দ্রের মান তেমনটা উন্নত না। সরকারিভাবে উদ্যোগ নিলে এখানে দেশের বৃহত্তম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। এতে করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারবে সরকার।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব নৌ ফাঁড়ির এএসআই শাহ্ আলম বলেন, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় গত ঈদের মতো এ ঈদেও বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় ও দূরদূরান্ত থেকে আসা সাধারণ দর্শনার্থীসহ রাজনীতিবিদ দেশের বিশিষ্টদের নিরাপত্তার ব্যাপারে নৌ পুলিশ সতর্ক রয়েছে। সে লক্ষ্যে আমাদের পুলিশ দুইটি টিমের সদস্যরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/প্রতিনিধি/ পিএস)