পাপ মোচনে যমুনা নদীতে গঙ্গা স্নানে পুণ্যার্থীদের ঢল
প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:২৭ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৫৪
‘হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ করো’ এই মন্ত্র উচ্চারণে পাপ-শাপ মোচনে মহাষ্টমীতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে গঙ্গা স্নান করতে হাজারো পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে। স্নান করতে এসে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ ভক্ত ও পুণ্যার্থীরা।
মঙ্গলবার সকালে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও যমুনা নদীর পাড়ে ৩০০ বছরের পুরোনো শ্রী শ্রী কালী মন্দিরের সরাতলা প্রাঙ্গণে পুণ্যস্নান উৎসব এবং মেলার আয়োজন করেছেন উপজেলার খানুরবাড়ী, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও গোবিন্দাসী গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন।
এদিকে যমুনা নদীতে গঙ্গা স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে মেলায় মিষ্টি জাতীয় বিভিন্ন ধরনের খাবার, বাঁশ-বেতের আসবাবপত্র, মাটি ও প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা, পুতুল, ঘোড়া, ট্রাক গাড়ি, হাঁড়ি-পাতিল, মাছের দোকান, চিড়া-মুড়ি, দই দোকানিরা তাদের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোর থেকেই দলে দলে পুণ্যস্নানে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী গোপালপুর, কালিহাতী, ঘাটাইল, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার নানা বয়সি হাজারো ভক্ত ও পুণ্যার্থীরা যমুনা নদীর পাড়ে আসছেন।
এ সময় তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে বিভিন্ন মানত ও দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন। সব মিলিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতেছিল সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন। তাছাড়া একে অপরের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন তারা।
স্নান করতে আসা সন্ধ্যা রানি দাস, সুজন দাস, সুদীপ পালসহ আরও অনেকেই জানান, নদীতে নতুন জলে পুণ্যস্নান করেছি ও পূজা দিয়েছি। মহাষ্টমীতে এখানে স্থানীয় লোকজনসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ মেলা দেখতে আসছে। ফলে যমুনায় স্নান তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে। এখানে পুণ্যার্থীরা স্নান করছে তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্য।
পুরোহিত পিন্টু গোস্বামী জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারো যমুনা নদীর পাড়ে ৩০০ বছরের পুরোনো শ্রী শ্রী কালী মন্দিরে পুণ্যস্নান উৎসব এবং মেলার আয়োজন করেছে আয়োজক কমিটি। পাপ-শাপ মোচনের আশায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা স্নান করে। এখানে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো পুণ্যার্থী ও ভক্তরা আসে। ফলে হাজারো ভক্তের ঢল নামে এই নদীতে।
পুণ্যস্নান ও মেলার আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ঘোষ বলেন, ‘টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকার সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পাপ মোচনের আশায় যমুনা নদীতে স্নান করতে এসেছেন। প্রশাসনের সহযোগিতায় স্নান উৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘মনের বসনা ও মানত পূরণে ভোর থেকে পুণ্যার্থী ও ভক্তরা স্নান ঘাটে পূজা অর্চনা করতে আসে। আগতদের জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়। স্নানোৎসবে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেছেন পুণ্যার্থী ও ভক্তদের নিরাপত্তার জন্য।’
অপরদিকে স্নান উৎসবকালীন আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে জানতে চাইলে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্নান উৎসবে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স, থানা পুলিশ ও নৌ পুলিশের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা কাজে নিয়োজিত রয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে স্নান উৎসব শেষ হয়।
(ঢাকা টাইমস/১৬এপ্রিল/এসএ)