ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনা

একসঙ্গে এত মৃত্যু দেখেনি ছত্রকান্দা গ্রামবাসী

প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৪৫ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:০২

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

সচিবালয়ে চাকরির সুবাধে সম্প্রতি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কয়েকটি পরিবারের তদবির করে সরকারে ত্রাণ সহায়তা আনেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের ছত্রকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার ছেলে রাকিবুল ইসলাম মিলন (৪০)।

সরকারি ত্রাণ সহায়তার ঢেউটিন আনার জন্য মঙ্গলবার নিজের পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে ফরিদপুরের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন মিলন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় কিছু মানুষের মুখে হাসি ফোটার প্রচেষ্টা মুহূর্তেই বিষাদে ছেয়ে যায়। মিলনের স্ত্রী, দুই সন্তান ও এক নানী শাশুড়িসহ ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটে সড়কে। মারা যান মিলন নিজেও। একসঙ্গে একই পরিবারের ৪ জনসহ (নানী শাশুড়িসহ ৫ জন) এত মৃত্যু এর আগে কখনো দেখেনি ছত্রকান্দা গ্রামের বাসিন্দারা।

এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনার খবরে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে নেওয়া হলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘একই পরিবারের পাঁচ ব্যক্তির মারা যাওয়ার খবর এলাকায় এলে গোটা গ্রাম জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। ইতোপূর্বে আমাদের এই ইউনিয়নে একই পরিবারের এতগুলো মানুষের প্রাণহানি হয়নি কখনো। এত মৃত্যু আমরা আগে কখনো দেখিনি।’

সংশ্লিষ্ট খবর: ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে ত্রাণ আনতে যাচ্ছিলেন মিলন, স্ত্রী-সন্তানসহ প্রাণ গেল ১৪ জনের

মিলনের মামাত ভাই নুরুজ্জামান খসরু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে কয়েকটি দরিদ্র পরিবারের জন্য ত্রাণের টিনের ব্যবস্থা করে সোমবার বিকালে বাড়িতে আসে মিলন। সকালে ফরিদপুর রওনা হন। তার আগে গতরাতে সর্বশেষ কথা হয়েছিল মিলনের সঙ্গে। বলেছিল ত্রাণের টিনগুলো বুঝিয়ে দিয়ে ওই পথেই চলে যাবেন ঢাকা। কিন্তু এটিই যে তার শেষ যাওয়া সেটি কেউ জানতো না।’

খসরু জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে রাকিবুল ইসলাম মিলন ছিলেন মেজো। তার বড় ভাই ফরিদুল ইসলাম স্কুলশিক্ষক, আর ছোট ভাই হাবিবুর রহমান মাস্টার্স পাস করে আলফাডাঙ্গা সদরে মোবাইল টেলকমের দোকান দিয়েছেন। আট বছর আগে আলফাডাঙ্গার বানা ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের রোকায়েশ মোল্লার মেয়ে সুমির সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

দুর্ঘটনায় নিহত মিলন ও তার এক ছেলে (ইনসেটে)মঙ্গলবার সকাল সোয়া আটটার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুরের অ্যাবলুম রেস্টুরেন্টের সামনে ইউনিক পরিবহনের বাসের সঙ্গে পিকআপের সংঘর্ষ হয়। এতে মোট ১৪ জন মারা যান। ঘটনাস্থলেই মারা যান মিলন ও তার স্ত্রী-সন্তানসহ এক পরিবারের ৪ জন।

এ ঘটনায় মিলনের মা এবং তার ভাই আলফাডাঙ্গা এ জেড পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফরিদ মোল্লার বড় মেয়ে আহত হয়েছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

(ঢাকাটাইমস/১৬এপ্রিল/এসআইএস)