রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২২ | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরও চ্যালেঞ্জ রয়েছে বেশকিছু ক্ষেত্রে। পণ্য ও সেবা রপ্তানির শতকরা হিসাবে গত কয়েক বছর ধরে স্বল্পোন্নত বা এলডিসির ৪৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নিচের সারিতে।

মোট দেশজ উৎপাদিত পণ্য ও বাণিজ্যিক সেবা রপ্তানির শতকরা হিসাবে গত কয়েক বছর ধরে স্বল্পোন্নত বা এলডিসির ৪৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নিচের সারিতে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিভিউ বলছে, স্বল্পোন্নত ৪৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি-জিডিপি অনুপাত ৩০তম।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ শেষ। কেমন যাচ্ছে বাংলাদেশের রপ্তানির চিত্র? রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমতে, দেশের প্রধান রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলো এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ। পোশাক, হিমায়িত পণ্য, চিংড়ি, চামড়া, পাট ইত্যাদি পণ্য রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা সরকারের ছিল তা পূরণ হয়নি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষেও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার শঙ্কাই বেশি। এফবিসিসিআই ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল হুদা চপল বলেন, “চেম্বার কানাডার কর্মকর্তারা আসছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা বৃদ্ধি করার জন্য তারা খুব আগ্রহী। আমরা এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে চেষ্টা করছি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার। এক্সপোর্ট না বাড়লে দেশের অর্থনীতি ভালো হবে না।”

বাংলাদেশ বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির প্রেসিডেন্ট রাশেদুল করিম মুন্না বলেন, “আমার মনে হয় না লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। কারণ সেলস ভ্যালু ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই আমরা যেহেতু জুট সেক্টর থেকে ম্যাটেরিয়াল এক্সপোর্ট করে থাকি এখানে যারা ম্যানুফ্যাকচারার আছে তাদের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে।”

দেশে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা থাকলেও ব্যবসার পরিবেশ অনুকূলে নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, দেশের রপ্তানিমুখী পণ্যে বৈচিত্র্য নেই। এতে বিদেশি ক্রেতা হারাচ্ছে দেশ।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “আমাদের এই ৮ মাসে ৩.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে খুবই কম, যদি আমি রেডিমেড গার্মেন্টসের কথা বলি। সব মিলিয়ে বললে ৩ শতাংশের কাছাকাছি। বিশেষ করে রেডিমেড গার্মেন্টসের ৮৪ থেকে ৮৫ শতাংশ আমদানিকারক দেশ। সার্বিকভাবে আমাদের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়িয়ে চাহিদামাফিক রপ্তানিমুখী পণ্যে বৈচিত্র্য নেই বলে রপ্তানির ওপর একটা প্রভাব পড়েছে।”

এদিকে পণ্য রপ্তানির যে ঘাটতি রয়েছে তা অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই পূরণ হবে বলে আশাবাদী সরকার। এছাড়া পিছিয়ে পড়া পণ্যগুলোকে কীভাবে আরও বেশি রপ্তানিযোগ্য করা যায় তা নিয়েও কাজ চলছে বলে জানালেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “তিন মাসে ৫ বিলিয়নের ওপরে গার্মেন্টস রপ্তানি করা হয়েছে। গত বছর শেষ তিন মাসের থেকে ৪.৫ শতাংশ বেশি হয়েছে। তাই গার্মেন্টস শর্টফল হওয়ার কোনো কারণ নেই। যদি হয়েও থাকে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।”

এছাড়া রপ্তানি বাড়াতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কমার্শিয়াল উইং সম্প্রসারণে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ শেষ হলেও দেশের প্রধান রপ্তানিযোগ্য পণ্যগুলো এখনো লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি।

(ঢাকাটাইমস/১৮এপ্রিল/এফএ)