মিয়ানমার সংকট সমাধানে একজনের খুশির জন্য বাকিদের নারাজ করবে না বাংলাদেশ: সেনা প্রধান

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৪৬ | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:১১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

মিয়ানমারে চলমান সংকট সমাধানে কোনো বিশেষ এক বন্ধুকে খুশি করতে বাকিদের নারাজ করবে না বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ-বিআইআইএসএস মিলনায়তেন প্রতিরক্ষা কূটনীতি বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমনটাই জানান সেনা প্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মিয়ানমারের কোনো কোনো জেনারেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। ফলে এই ঝুঁকি নেবে না বাংলাদেশ। এমন অবস্থায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে যা সম্ভব, তা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সেনা প্রধান।

শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর। যদিও দেশটির সামরিক বাহিনীর নিজস্ব জটিলতার কারণে সব সম্ভব হচ্ছে না। তবে সেনাবাহিনী সঠিক পথেই আছে।’

জাতীয় নীতি থেকে প্রতিরক্ষা কূটনীতি নির্ধারণ হলেও সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এই খাতে বাজেট ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সামরিক বাহিনীর পূর্নগঠনের সক্ষমতা আছে। জাতীয় স্বার্থ ও বিশ্ব শান্তি রক্ষায় সামরিক বাহিনী সদা প্রস্তুত এবং জাতিসংঘের শান্তি রক্ষায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার সর্বোচ্চটুকু করছে।’

বিআইএসএস মিলনায়তনে ‘Defence Diplomacy: Strategy for Bangladesh’ শীর্ষক এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান।

সেমিনারে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তা, বিদেশি দূতাবাসের উর্দ্ধতন প্রতিনিধি, উর্দ্ধতন সামরিক কর্মকর্তা, সাবেক কূটনীতিক, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে তাদের মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরে ধরেন।

এদিনের সেমিনারে চারটি বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। প্রবন্ধ উপস্থাপকগণ ও আলোচকরা তাদের আলোচনায় বলেন, একটি দেশের বৈদেশিক ও নিরাপত্তা নীতির উদ্দেশ্য পূরণে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিরক্ষা কূটনীতি একটি কার্যকর কূটনৈতিক হাতিয়ার এবং সঙ্কট প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিরক্ষা কূটনীতিকে বিশ্বশান্তি রক্ষার্থে সশস্ত্র বাহিনীর ব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যা দেশের জাতীয় স্বার্থ ও পররাষ্ট্র নীতির লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।

বক্তরা আরও বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সশস্ত্র বাহিনীর অংশগ্রহণ- প্রতিরক্ষা কূটনীতির একটি দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশকে বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি তার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শনের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী এর গুরুত্ব ও প্রভাব বৃদ্ধির সুযোগ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক অঙ্গনে প্রতিরক্ষা কূটনীতির ধারণা ও আবেদন বিস্তৃত হচ্ছে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৮এপ্রিল/এলএম/এজে)