সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিতে ইরাকি সশস্ত্র গোষ্ঠীর রকেট হামলা
প্রকাশ | ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪০

ইরাকের জুম্মার শহর থেকে সিরিয়ার উত্তরপূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে পাঁচটি রকেট হামলা চালানো হয়েছে। ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি সূত্র এবং মার্কিন কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারি থেকে ইরাকে মার্কিন সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো তাদের হামলা বন্ধ রাখার পর আবারও হামলার ঘটনা ঘটলো।
রয়টার্স বলছে, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ শিয়া এলা সুদানি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করে দেশে ফেরার পর দিনই এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ইরাকের সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী সংগঠন কাতাইব হিজবুল্লা’র সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি টেলিগ্রাম গ্রুপের পোস্টে বলা হয়েছে, ইরাকে মার্কিন সামরিক জোটের কার্যক্রম শেষ করার আলোচনা ধীর গতিতে আগানোর ফলে ইরাকের সশস্ত্র বাহিনী তিন মাস হামলার বন্ধ রাখার পর পুনরায় হামলা শুরু করেছে।
কাতাইব হিজবুল্লাহ’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এমন আরও একটি টেলিগ্রাম গ্রুপ সাবরিন নিউজ জানিয়েছে, ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি দেয়া হয়নি।
নাম না প্রকাশের শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রবিবার ইরাক থেকে সিরিয়ার রুমালিয়ানে একটি জোট ঘাঁটিতে পাঁচটির বেশি রকেট হামলা চালানো হয়েছে। তবে এতে কোনো মার্কিনি আহত হয়নি।
কর্মকর্তারা বলছেন, রকেট হামলা ব্যর্থ হয়েছে। তবে এটা স্পষ্ট নয় যে, রকেট হামলা নির্দিষ্ট স্থানে আঘাতে হানতে ব্যর্থ হয়েছে নাকি সেগুলো পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এটাও স্পষ্ট নয় যে, রকেট হামলার মাধ্যমে ওই ঘাঁটিকেই শুধু টার্গেট করা হয়েছিল কিনা।
মার্কিন কর্মকর্তা আরও বলেছেন, ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের একটি যুদ্ধবিমান রকেট লঞ্চারের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে।
এদিকে দুই নিরাপত্তা সূত্র এবং ইরাকের একজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, পেছনে রকেট লঞ্চার লাগানো একটি ছোট ট্রাক সিরিয়ার সীমান্তবর্তী শহর জুম্মারে পার্কিং করা ছিল।
রয়টার্সের একজন ক্যামেরাম্যান ঘটনাস্থলে একটি মরদেহ দেখতে পান।
এক ইরাকি সেনা কর্মকর্তা বলেন, ধ্বংস হওয়া ট্রাকটিকে আরও তদন্তের জন্য জব্দ করা হয়েছে এবং প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে এটি একটি বিমান হামলায় ধ্বংস হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক মার্কিন ঘাঁটিতে আক্রমণ চালাচ্ছে বিভিন্ন গোষ্ঠী।
গত জানুয়ারিতেও সিরিয়া সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্ব জর্ডানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় তিনজন মার্কিন সেনা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। এছাড়াও লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজে আক্রমণ চালানো হয়েছে। এর আগে ইয়েমেনের কাছে লোহিত সাগরে দুই মার্কিন নেভি সিল নিখোঁজ হয়েছিলেন। পরে তাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ইসরায়েলের অভিযান শুরু হওয়ার পর ইরাক এবং সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে অন্তত ১৫০টি আক্রমণ হয়েছে। ইরানের মদতপুষ্ট ইরাকে অবস্থিত ইসলামিক গোষ্ঠী এই হামলার সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের।
সূত্র: রয়টার্স
(ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/এমআর)