ঢামেক হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারের সামনে এসির কম্প্রেসর!

প্রকাশ | ১৩ মে ২০২৪, ২০:০৮ | আপডেট: ১৩ মে ২০২৪, ২১:০৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের এক চিকিৎসকের রুমের এসির কম্প্রেসর বসানো হয়েছে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) ও লেজার রুমের সামনে। চিকিৎসকের রুম আর ওটি ও লেজার রুম একই সঙ্গে লাগোয়া।

সাধারণত এসির কম্প্রেসর লাগানো হয় বিল্ডিংয়ের ছাদে বা বিল্ডিংয়ের দেওয়ালের বাহিরের অংশে। সেখানে অপারেশন থিয়েটারের সামনে বদ্ধ জায়গায় এসির কম্প্রেসর লাগানো কতটা নিরাপদ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া এই বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরাও এর সমালোচনা করছেন।

রুমটি সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. লিটন দেবনাথের।

হাসপাতালের কর্মচারী পরিচয় দেওয়া একজন জানিয়েছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসি বসায়নি। কোম্পানির লোক (ওষুধ কোম্পানি) বসিয়ে দিয়েছে।

ওটি ও লেজার রুমের দায়িত্বরত একজন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এখানে এসির গরম বাতাসে যাতায়াত করতে কষ্ট হয়। আমাদের রুমের (ওটি ও লেজার রুম) গ্লাস খুললে ভেতরে এসির আউটডোরের (কম্প্রেসার) গরম বাতাস ঢুকে।

এসি কে লাগিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্যার নিজে কিনে লাগিয়েছেন।’

হাসপাতালে বন্ধুকে অপারেশন করাতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ‘বন্ধুর লেজার অপারেশনের জন্য ঘণ্টা তিনেক এই ডিপার্টমেন্টে ছিলাম। এখানে এসির আউটডোর দিয়ে আগুনের হল্কার মতো গরম বাতাস বের হচ্ছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে রোগী ও তার স্বজনরা। কী অমানবিক!’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্হিবিভাগের নিচ তলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি থেকে হাতের বামের প্রথম রুমটাই চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগ। রুমের দরজা দিয়ে ঢুকে সোজা গিয়ে ডানে মোড় ফিরে আবারও হাতের ডানের রুম নং ৭ এ ওটি ও লেজার রুম। এই রুমের সঙ্গে লাগোয়া ডা. লিটন দেবনাথের রুমের ভেতরের এসির কম্প্রেসর বাসানো হয়েছে রুমের সামনেই। ওটি ও লেজার রুমে যেতে হলে এসির কম্প্রেসরের একেবারে সামনে দিয়ে যেতে হয়। অর্থাৎ ওটি ও লেজার রুমের প্রবেশপথেই লাগানো হয়েছে এসির কম্প্রেসর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এখানে খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে এটা আমি প্রমাণ করতে পারব না। হট এয়ার বের করে দিতে পারলে সমস্যা হওয়ার কথা না।’

এ বিষয় জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এতো বড় পরিধির হাসপাতালে শত শত এসি আছে। এখানে একটা এসির কথা আমার নলেজে (মাথায়) থাকার কথা? আমি দায়িত্ব নিয়েছি চার মাস। আমি পিডাব্লিউডিকে (গণপূর্ত অধিদপ্তর) বলে রেখেছি যে, কোনো কোম্পানির দেওয়া হোক আর নিজের কেনা হোক, অনুমতি ছাড়া এসি লাগাতে পারবে না। কারণ এখানে লোডের বিষয় আছে। এটা কারো বাড়ি না যে ইচ্ছে হলেই এসি লাগিয়ে ফেললাম। কারণ দেখতে হবে এখানে লোড ক্যাপাসিটি আছে কি না, তারপর বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে।’

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক আরও বলেন, ‘যারা এসি চাইতে আসে আমি তাদেরকে বলি আপনি এসি অথরাইজড কি না। কারণ সরকার সবাইকে এসি অথরাইজড করেনি। একজন মেডিকেল অফিসার, জুনিয়র কনসালটেন্ট চাইলেই এসি লাগাতে পারবে না। আমি বিষয়টা দেখব। দরকার হলে আমি স্বশরীরে গিয়ে দেখব।’

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমি কালকেই দেখব এরকম কিছু হলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা ইন্সট্রাকশন (নির্দেশনা) হলো অনুমতি ছাড়া কোনো এসি লাগানো যাবে না। কেউ নিজে কিনে লাগাতে চাইলেও হবে না। সরকারি অফিসে এটা করা সম্ভব না, এমন করা যায় না।’

(ঢাকাটাইমস/১৩মে/টিআই)