৪ কোটি টাকা দুর্নীতি, এলজিইডির সাবেক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশ | ১৪ মে ২০২৪, ২২:০২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৮ টাকা অর্জন করায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পিআরএল) মো. মুজিবুর রহমান সিকদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক জেসমিন আক্তার বাদি হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং ২৬(২) ধারায় এই মামলা করেন।

মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, মো. মুজিবুর রহমান সিকদারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর তার নিজ নামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব কমিশনে দাখিল করেন। এতে তিনি ৬ কোটি ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৮৭৪ টাকা মূল্যের স্থাবর ও ৪ কোটি ৬১ লাখ ৪৭ হাজার ৬২ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদসহ মোট ১০ কোটি ৭৮ লাখ ৯০ হাজার ৯৩৬ টাকার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তিনি কোনো দায়-দেনার তথ্য প্রদান করেননি। কিন্তু অনুসন্ধানে তার স্থাবর সম্পদ ও অস্থাবর সম্পদসহ পারিবারিক ব্যয় ব্যতীত সর্বমোট মোট ১২ কোটি ২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩৬ টাকার তথ্য পায় দুদক। এতে তিনি ১ কোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকার সম্পদ গোপন করেন।

এছাড়াও মুজিবুর রহমান সিকদার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদকে বৈধতা দিতে মাছ চাষের নামে ভুয়া চুক্তিনামা বা দলিলপত্র তৈরি করেন। অনুসন্ধান করে দুদক দেখতে পায় তিনি এখানে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ২৫৭ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অর্জন করেছেন।

সব যাচাই করে মুজিবুর রহমানের গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ থেকে ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৮ টাকা বেশি পাওয়া যায়। যা তিনি জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে অর্জন করেছেন।

এজহারে আরও বলা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে মুজিবুর রহমান সিকদার অবৈধ আয়কে বৈধ করতে ১৮টি দলিলের মূলে চা বিক্রেতা, পান বিক্রেতা, মুদি দোকানদার, কাঠমিস্ত্রী, কৃষক এবং প্রবাসী শ্রমিক ব্যক্তিদের নিকট থেকে হেবাবিল এওয়াজনামা দলিলের মাধ্যমে দলিল মূল্য ১ কোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকায় ২০৩.৫ শতাংশ জমি দান হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু দেখা যায় এই দলিল দাতাদের সাথে মুজিবুর রহমানের রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই। দলিল দাতা এবং দলিল গ্রহীতার আর্থিক অবস্থা বিবেচনা, গৃহীত বক্তব্যের আলোকে উক্ত হেবাবিল এওয়াজ দলিল গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং ২০৩.৫ শতাংশ জমি বাবদ হেবাবিল এওয়াজনামা দলিলে ১ কোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকা তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন। তাছাড়াও হেবা দলিলের আড়ালে কর ফাঁকি এবং জমি ক্রয়ের প্রকৃতমূল্য গোপন করেছেন তিনি।

মৎস্য আয়ের সমর্থনে ভুয়া রেকর্ডপত্র তৈরি করে এক কোটি চব্বিশ লক্ষ চার হাজার টাকা গোপনসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত চার কোটি বিশ লাখ সাইত্রিশ হাজার পাঁচশত আটাশ টাকার সম্পদ ভোগদখলে রেখে দুদককে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে মুজিবুর রহমান দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা এবং ২৬(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১৪মে/এমআই/এসআইএস)