দরপত্র ছাড়াই ব্রিজের মালামাল বিক্রির অভিযোগ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৫ মে ২০২৪, ২১:১৩
অ- অ+

গাইবান্ধা সদরে আলাই নদীর উপর দেড় যুগ আগে নির্মাণ করা হয় একটি ফুট ব্রিজ। ওই ব্রিজ দিয়ে লোকজন শুধুমাত্র পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারতো। উন্নত যোগাযোগের স্বার্থে সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রয়োজন দেখা দেয় পুরোনো ব্রিজটি ভেঙে ফেলার। কিন্তু ব্রিজটি ভাঙার পর পুরোনো মালামাল বিক্রি করতে নিয়মানুযায়ী দরপত্র আহ্বান করার কথা থাকলেও তা না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘জাকাউল্লা এন্ড ব্রাদার্স’ ব্রিজের দুই পাশের ইট-রডসহ সবকিছু খুলে নিয়ে বিক্রি করে দেয়। এভাবে প্রকৌশলী-ঠিকাদারের রফা দফায় সরকারি টাকা গায়েব হয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের থানসিংহপুর কাছারি সড়কে আলাই নদীর উপর নির্মিত পুরোনো ওই ব্রিজটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নিয়ন্ত্রণাধীন।

স্থানীয় ও এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, দেড় যুগ আগে নির্মিত ব্রিজ দিয়ে শুধুমাত্র লোকজন চলাচল করতে পারতো। রিক্সা ভ্যান থেকে শুরু করে ভারী কোনো যানবাহন চলতে পারতো না। উন্নত যোগাযোগের স্বার্থে ৫ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৫৪ মিটার আধুনিক ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি। যথারীতি টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জাকাউল্লা এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই টেন্ডারটি প্রাপ্ত হয়ে ব্রিজটির কাজ শুরু করে। কিন্তু এলজিইডি কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবে দরপত্র আহ্বান ছাড়াই সম্পূর্ণ অবৈধভাবে যাকাউল্লা অ্যান্ড ব্রাদার্স পুরাতন ব্রিজটির দুই পাশের ইট রডসহ সকল মালামাল দিনদুপুরে বিক্রি করে দেয়। এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকার লোকজন। পরে গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিউল ইসলাম সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর জন্য একটি নোটিশ প্রদান করেন এবং মালামাল ফেরত দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন।

বোয়ালি ইউনিয়নের থানসি্ংহপুর এলাকার বাবু মিয়া নামে এক এলাকাবাসী জানান, আমরা এলাকাবাসী এত নিয়ম কানুন বুঝি না। তবে আমরা দেখেছি ঠিকাদারের লোকজন ট্রাক্টর যোগে ইট, রডসহ অনেক মালামাল নিয়ে গেছে। গত কয়েকদিন থেকে শুনতেছি তারা নাকি সেগুলো চুরি করে নিয়ে গেছে।

একই এলাকার মঞ্জু মিয়া নামে আরেকজন জানান, এই মালামালগুলো যখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিয়ে যায় এলাকাবাসী তখন বাধা দিয়েছিল। কিন্তু তাদের লোকজনের কাছে এলাকাবাসী ছিল অসহায়। যেহেতু মালামালগুলো সরকারি এগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাকাউল্লা অ্যান্ড ব্রাদার্সের চেয়ারম্যান মো. জাকাউল্লাহ্ মুঠোফোনে জানান, আমার সারাদেশে অনেকগুলো সাইট চলে। গাইবান্ধায় ব্রিজের মালামাল বিক্রির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। গাইবান্ধায় আমার প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো। তাছাড়া কোনো কারণ দর্শানোর চিঠি পাইনি। তবে মেইলে দিয়ে থাকলে তা চেক করা হয়নি।

গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিউল ইসলাম জানান, ঘটনাটি শুনেছি। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সদর উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে কারণ দর্শানোর জন্য একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে পাশাপাশি মালামাল ফেরত প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের যথাযথ জবাব না পেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৫মে/প্রতিনিধি/পিএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সোনারগাঁ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রক্সি দলিল লেখকের দাপট
বোয়ালমারীতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা স্মৃতি স্তম্ভ ভেঙে দিল ছাত্র-জনতা
যুক্তরাষ্ট্রে নারী নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক জাইমা রহমানের
আনন্দ সিনেমা হলের সামনে ককটেল সদৃশ বস্তু রেখেছিল কারা?
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা