পাহাড়ি ঢলে ভোগান্তিতে সুনামগঞ্জের ২ লাখ মানুষ
প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৪, ১৯:৪৫
ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, বৌলাই, রক্তি ও যাদুকাটা সীমান্ত নদী দিয়ে নামছে পাহাড়ি ঢলের পানি। ফলে দ্রুত গতিতে পানি বেড়ে ডুবে যাচ্ছে জেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তা ঘাট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ২ লাখেরও বেশি মানুষ। আর ভয়াবহ বন্যার শঙ্কায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন জেলার ভাটি অঞ্চলের মানুষ।
সুরমা নদীর পাড়ের বাসিন্দা শামিম আহমেদ জানান, গতকাল সকাল থেকে সুনামগঞ্জে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নামছে ভারতের পাহাড়ি ঢল। সে কারণে উৎকণ্ঠায় সময় পার করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি কখনও কমছে আবারও কখনও বাড়ছে। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, বৌলাই, রক্তি ও যাদুকাটা নদী দিয়ে প্রবল বেগে ভাটির দিকে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। এতে করে যে-সকল হাওরে পানি প্রবেশ করেনি সেগুলো এখন কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সুনামগঞ্জের ২০ লাখেরও বেশি মানুষ।
ঢলের পানিতে জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক ও দোয়ারা বাজারসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তা ঘাট তলিয়ে গেছে।
দোয়ারা বাজার উপজেলার শরীফপুর গ্রামের প্রধান সড়ক ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দোয়ারা বাজার উপজেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে সুরমা, লক্ষ্মীপুর ও বাংলা বাজারসহ তিন ইউনিয়নের।
এছাড়া বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কৈয়ারকান্দা-দূর্গাপুর সড়ক ডুবে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলার সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ছোট ছোট নৌকায় করে বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
পানি বেড়ে যাওয়ায় রাস্তার পাশে আটকা পড়েছে ছোট-বড় প্রায় ৫০টি যানবাহন। এমনকি ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
জাকির মিয়া ও শরীফ উদ্দিনসহ ভোগান্তিতে পড়া বেশ কিছু মানুষ জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার কারণে জেলা শহরে যেতে কষ্ট হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে সময় গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢল অব্যাহত থাকলে এবং সুনামগঞ্জের সকল নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলে এই জেলায় স্বল্প মেয়াদি একটা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
(ঢাকাটাইমস/০৪জুন/ প্রতিনিধি/পিএস)