দেশীয় পাবদা মাছ চাষে সফল দিনাজপুরের সাকেরা
প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৪, ১৯:৩৪ | আপডেট: ১২ জুন ২০২৪, ১৯:৩৮

দিনাজপুরে দেশীয় পাবদা মাছ চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন মৎস্য খামারি সাকেরা তুহিন আহসান। তার দেখা দেখি এখন অনেকে এই পাবদা মাছ চাষ শুরু করেছেন।
সরেজমিন সাকেরার মৎস্য খামারে গিয়ে দেখা যায়, ১৬ একর আয়তনের তিনটি পুকুরে তিনি পাবদা মাছ চাষ করেছেন। এর আগে পাঙাস, রুই, কাতল, মৃগেল, সিলভার কার্প ও চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতি মাছের চাষ করলেও এক বছর ধরে পাবদা মাছ চাষ করছেন তিনি। এ মাছ চাষে নিজের পাশাপাশি আরও ৩/৪টি পরিবারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
কম খরচে অধিক লাভ এবং সাকেরার সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এখন ঝুঁকছেন পাবদা মাছ চাষে।
দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার ৬নং মোমিনপুর ইউনিয়নের ভবের বাজার ইন্দ্রপুর গ্রামে ছোট, বড় মিলিয়ে মোট সাতটি পুকুর রয়েছে, সাকেরা তুহিন আহসানের। এসব পুকুরেই তিনি চাষ দেশীয় পাবদা মাছ । আর এতে স্বল্প খরচে তার অনেক লাভ হচ্ছে।
সাকেরা তুহিন আহসান জানান, আমি প্রায় ২০ বছর ধরে মাছ চাষ করছি। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করলেও এই প্রথম পাবদা মাছের চাষ করছি। এই মাছ চাষে খরচ ও শ্রম কম। তবে লাভ অনেক বেশি।
মাছ বিক্রেতা পুকুরে এসেই মাছ ক্রয় করে নিয়ে যায়। কিছু টাকা বাকি রাখলেও আবার মাছ নিতে আসলে সেই টাকা দিয়ে দেয় পরের দফায়।'
মাছ ক্রয় করতে আসা নিখিল চন্দ্র জানালেন, ' পুকুরের পাবদা মাছের চাহিদা বেশি। এ মাছের স্বাদ বেশি হওয়ায় ক্রেতারা দাম বেশি হলেও এ মাছ নিয়ে যায়। তাছাড়া ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী আমরা এই মাছ বিক্রি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।'
এদিকে সাকেরার সফলতায় অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই ঝুঁকেছেন পাবদা মাছ চাষে।
তাদেরই একজন কামরুল ইসলাম। তিনি জানান, সাকেরার সাফল্য দেখে তার দুটি পুকুরে দেশীয় পাবদা মাছ চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে
দুই বার মাছ তুলেছেন। এখনো অনেক পাবদা পুকুরে আছে। যা বিক্রি করেছেন এবং এখনো পুকুরে যা অবশিষ্ট আছে, তাতে লাভ ভালোই হবে বলে মনে করছেন তিনি।'
তিনি আরও জানান, কম খরচে পুকুরে দেশীয় সুস্বাদু পাবদা মাছের চাষ করে বেশি মুনাফা পাওয়ায় অনেকের এখন আগ্রহ এই পাবদা মাছ চাষে।
দিনাজপুর শহর থেকে সাকেরার পুকুরে পাবদা মাছ চাষ দেখতে আসা নুর আলম জানান, আমি লোক মুখে শুনে এই পুকুরে পাবদা মাছ চাষ দেখতে এসেছি। দেখে খুবই ভালো লাগলো। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে কীভাবে পুকুরে দেশীয় পাবদা মাছ চাষ করা যায় তা সরেজমিন এসে দেখলাম এবং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানলাম। আমিও আমার একটি পুকুরে পাবদা মাছ চাষ করব।'
সাকেরা তুহিন আহসানকে এ বিষয়ে প্রথম থেকেই সহায়তা করে আসছে, মৎস্য বিভাগের পাশাপাশি গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র-জিবিকে এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন নামে দু’টি প্রতিষ্ঠান।
গ্রাম বিকাশ কেন্দ্রের মৎস্য কর্মকর্তা মো.জাহেদুল ইসলাম জানান,পাবদা মাছে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। দেশীয় পাবদা মাছে রয়েছে বেশ স্বাদ। বাজারে এই মাছের চাহিদাও রয়েছে ভালো। তাই এই পাবদা মাছ চাষে খামারিদের বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হয় না। উৎপাদিত মাছ পুকুর থেকেই বিক্রি হয়। বিক্রেতা পুকুর থেকেই মাছ ক্রয় করে নিয়ে যায়।
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে এমন আরও অর্ধশতাধিক পুকুরে পাবদা মাছের চাষ হচ্ছে। এ মাছ চাষ করে লাভবান খামারিরা। আগামীতে আরও কিছু পুকুরে দেশীয় পাবদা মাছ চাষের পরিধি বাড়বে। অনেকে আগ্রহী এ মাছ চাষে। আমরা পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এই মাছ চাষে খামারিদের কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি।'
(ঢাকাটাইমস/১২জুন/প্রতিনিধি/পিএস)