প্রস্তাবিত বাজেটে ইলেকট্রিক যানবাহনকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, রিভিউ করার দাবি

প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৪, ২১:০৯ | আপডেট: ১২ জুন ২০২৪, ২২:০২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

পরিবেশবান্ধব হওয়ায় সারাবিশ্বই এখন জ্বালানি চালিত যানবাহন ছেড়ে ইলেকট্রিক যানবাহনের (ইভি) দিকে ঝুঁকছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বেশ কয়েকবার ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল তথা ইলেক্ট্রিক যানবাহনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। বাংলাদেশকে সেভাবে প্রস্তুত করার কথা বলেছেন। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ইভির ক্ষেত্রে কোনো সহায়তার ঘোষণা নেই জানিয়ে এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকক্সারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বামা) নেতৃবৃন্দ।

তারা বলছেন, বিনিয়োগের শর্তে যদি ডিউটি সুবিধা দেওয়া যায় তাহলে এই খাত বিকশিত হওয়া সম্ভব, না হলে এই খাত সম্প্রসারণ করা কঠিন। এ জন্য প্রস্তাবিত বাজেট রিভিউ করার দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন বামা নেতৃবৃন্দ।

বামা প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, চ্যালেঞ্জিং সময়ে সরকার ভালোভাবে বাজেট দিয়েছে, আমরা মনে করেছিলাম সব জায়গায় ডিউটি আরোপ হবে তেমনটি হয়নি। তবে বাজেটে অনেক আশা ছিল, কিছু সাপোর্ট পাব। কিছু সাপোর্ট পেয়েছি সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে। অন্য ক্ষেত্রে সেভাবে পাওয়া যায়নি। ইভিকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। চীন পনের বছর ধরে সহায়তা দিয়েছে, ভারত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে, আমাদের দেশেও সহায়তা প্রয়োজন, না হলে এই খাতটি বিকশিত হবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে খরচ হয়েছিল ২ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা, আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাতে ব্যয় হয়েছে ৯ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। সরকার যদি বহুচাকার ট্রাকে ছাড় দেন, হাজার হাজার কোটি টাকা বেঁচে যাবে। সারাবিশ্বে বহুচাকার ট্রাকের ওপর ছাড় দেওয়া হয়। রোড, ব্রিজ ও ফেরির টোল কমিয়ে আনা উচিত। তাহলে বড় গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গেলে সড়কের ক্ষতি কমে আসবে।

তিনি বলেন, আমরা সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে খুবই বিব্রত, সরকারও বিব্রত। আমরা চ্যাসিস দিই, সবাই বডি বানায়। আমার মনে হয় বডি বানানোর ক্ষেত্রে নীতিমালা থাকা উচিত। সরকার অনুমোদিত ছাড়া কেউ বডি বানাতে পারবে না, সরকারের রেগুলেশন করা দরকার। টায়ারের ডিউটি বেশি। অনেকে টায়ার নির্ধারিত সময়ে বদলাচ্ছে না। এতে দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। চাকার ডিউটি শূন্য না হলেও অর্ধেকে নামিয়ে আনা উচিত।

 

রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান বলেন, অতীতে যে প্রোণোদনা দিয়েছে, তার ভিত্তিতে টু-হুইলার শিল্পে বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ইভির ক্ষেত্রে সারাবিশ্বে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশেও সহায়তা দেওয়া জরুরি।

ইজিবাইক প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজুর রহমান খান বলেন, টেকনিক্যাল বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, আমার মনে হয় একটা সিদ্ধান্ত আসবে। এটাকে কিছুটা আধুনিকায়ন করে অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।

আকিজ মোটরস এর প্রতিষ্ঠাতা শেখ আমিন উদ্দিন বলেন, সবার আগে হচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্য। আজকে ঢাকার অবস্থা কী, আমাদের গর্ভবতী মায়েদের কী অবস্থা এসব বিষয়ে বিবেচনায় নিতে হবে। ইভি পরিবেশবান্ধব যানবাহন। সারাবিশ্বে এর ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশে সহায়তা দেওয়া না হলে পিছিয়ে পড়বে এই খাত। আমরা চাই কমপ্লিট ইভি নীতিমালা।

বিভাটেক এন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদুর রহমান পরাগ, ইফাদ গ্রুপের পরিচালক আবির বকশীসহ অনেক উদ্যোক্তা এতে অংশ নেন। তারা সরকারের কাছে বাজেট রিভিউ করার দাবি জানান।

(ঢাকাটাইমস/১২জুন/ইএস)