পাবনায় অবৈধ তেলের পাম্পের রমরমা ব্যবসা
প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২৪, ০৯:৩১
পাবনায় একের পর এক গড়ে উঠছে অবৈধ তেলের পাম্প। এসব পাম্পের নেই কোনো অনুমোদিত কাগজপত্র। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে তারা কার্যক্রম চালালেও দেখার যেন কেউ নেই!
ছোট ছোট দোকানে ফিলিং স্টেশনের মতো ডিসপেন্সার মেশিন বসিয়ে বিক্রি হচ্ছে পেট্রল, অকটেন। অথচ এগুলোর নেই কোনো ডিলারশিপ কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন। জ্বালানি তেল বিক্রির এ ব্যবস্থা পরিচিত ‘মিনি পাম্প’ নামে।
পাবনার চাটমোহর ফরিদপুর ও ঈশ্বরদীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন সড়কের পাশে জ্বালানি তেল বিক্রির এ ধরনের বেশ কিছু দোকান গড়ে উঠেছে। আরও কয়েকটি দোকান চালুর অপেক্ষায়। এসব পাম্পে ভেজাল তেল সরবরাহের যেমন আশঙ্কা আছে, তেমনি আছে নিরাপত্তা ঝুঁকিও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ধরনের ‘মিনি পাম্প’ চলছে দুই বছরের বেশি সময় ধরে। স্থানীয় প্রশাসন, বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের ব্যবস্থাপনায় তেল বিক্রির কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।
পাবনার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘এসব তেলের পাম্প সম্পূর্ণ অবৈধভাবে চলছে। এতে রয়েছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। তাছাড়া এসব পাম্প তৈরির কারণে বিপাকে রয়েছেন মূলধারার ব্যবসায়ীরা। তারা কোটি কোটি টাকা খরচ করেও পাম্পের অনুমোদন পাচ্ছে না। সরকারও কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না৷ এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
পাবনার নাগরিক মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কিছু ব্যক্তি অসাধু উপায়ে বেশি অর্থ লাভের আশায় সরকারকে ফাঁকি দিচ্ছে। তাদের কঠোরভাবে দমন করা প্রয়োজন। নইলে ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিণতি দাঁড়াবে।’
পাবনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, ‘অনুমোদনহীন এসব তেলের পাম্প স্থাপন করার কারণে কিছু জনগণের সাময়িক সুবিধা হলেও প্রচুর পরিমাণে নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। খেয়াল করলে দেখা যায়, এসব তেলের পাম্প বেশিরভাগই বাসাবাড়িতে এবং দোকানে বসানো হয়েছে। সেখানে সিগারেট খাচ্ছেন স্থানীয়রা। যেকোনো সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও করতে পারে। তাই বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’
এসব তেলের পাম্প কীভাবে চলছে জানতে চাইলে পাম্প কর্তৃপক্ষ কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে সেখানে থাকা কয়েকজন কর্মচারীর কাছে জানা যায়, প্রত্যেকটি পাম্প থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ লিটার তেল বিক্রি করা হয়।
পাবনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. শারফুল আহ্সান ভূঞা বলেন, ‘এসব তেলের পাম্পের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা প্রয়োজন। তা না হলে যেকোনো সময় বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
পাবনা জেলা প্রশাসক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অনুমতি না নিয়ে কোনো প্রকারের তেলের পাম্প পরিচালনা করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি এরকম কাজ করে থাকে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
(ঢাকাটাইমস/২৭জুন/এজে)