রাসেলস ভাইপার: গামবুট পেয়ে খুশি চরাঞ্চলের চাষিরা

প্রকাশ | ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৬

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ফরিদপুরের চরাঞ্চলের কৃষাণ-কৃষাণীদের মাঝে গামবুট বিতরণ করা হয়েছে। গামবুট পেয়ে খুশি তারা। জেলা প্রশাসন বলছে, পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষকদের মাঝে গামবুট বিতরণ করা হবে।
রবিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চত্বরে ফরিদপুর সদর উপজেলার চরাঞ্চলখ্যাত নর্থচ্যানেল ও ডিক্রিরচর ইউনিয়নের দুই শতাধিক কৃষাণ-খৃষাণীদের হাতে গামবুট তুলে দেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার।

জানা যায়, ফরিদপুরের চরাঞ্চলে রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রব বেড়েছে। সাপের আতঙ্কে খেতে যাচ্ছে না কৃষক। খেতেই অনেক ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই সাপের কামড়ে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন বেশ কয়েকজন। 

গামবুট নিতে আসা চাষি রাশেদ শেখ বলেন, এতদিন সাপের ভয়ে খেতে যেতে পারিনি। গামবুট পেয়েছি এখন নিশ্চিন্তে খেতে যেতে পারবো। খেতের ফসল তুলে ঘরে আনতে পারবো। অনেক ফসল ইতোমধ্যেই খেতেই নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া শ্রমিকরাও ভয়ে খেতে নামছিল না। এখন সবাই খেতের ফসল ঘরে আনতে পারবো। 

রোকেয়া বেগম বলেন, নদীর পাশেই আমাদের বাড়ি। সাপের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারি না। জেলা প্রশাসক স্যার আমাদেরকে গামবুট দিয়েছেন, এখন গামবুট পড়ে খেতে যেতে পারবো। চলাচলেও কোনো সমস্যা হবেনা। নিশ্চিন্তে ফসল ঘরে তুলে আনতে পারবো। 

তিনি আরও বলেন, স্বামীসহ সন্তানরা মিলে আমরা সবাই খেতে কাজ করি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক সময় খেতে যেতে হয়েছে। সাপের ভয়ে তীল খেত থেকে তুলতেই পারিনি এখনো। তীল খেতের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গামবুট পেয়েছি, এখন খেতে যেতে সমস্যা হবে না।

আরেক চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাদাম কিছুটা তুলেছি। গামবুট পেয়েছি এখন খেতে গিয়ে ফসল তুলতে পারবো। কৃষি শ্রমিকরাও খেতে যেতে চায়না। একারণে নিজেদেরই ঝুঁকি নিয়ে ফসল তুলতে হচ্ছে। গামবুট পেয়ে আমরা অনেক খুশি। 

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, রাসেলস ভাইপারের ভয়ে কৃষকরা খেতে ফসল তুলতে যেতে পারছিল না। কৃষকদের কথা চিন্তা করে সাপের কামড় থেকে বাঁচাতে গামবুট দেওয়া হয়েছে। চরাঞ্চলের চাষিদের মাঝে আজ গামবুট দেওয়া হলো। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ইউনিয়নের চাষিদের মাঝে গামবুট বিতরণ করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, এছাড়া সচেতনতায় মাইকিং সহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুদ করা হয়েছে। চরাঞ্চলের কোনো চাষিকে সাপে কাটলে দ্রুত হাসপাতালে আনার জন্য স্পীড বোর্টের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। কৃষকের সকল ধরনের সহযোগীতা করা হবে। 
জেলা প্রশাসন কৃষকদের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

গামবুট বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইয়াছিন কবির, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রামানন্দ পাল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামান্না তাসনীম, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সহ অনেকে।
(ঢাকা টাইমস/০১জুলাই/এসএ)