কোপা আমেরিকা: মার্টিনেজ বীরত্বে টাইব্রেকারে জিতে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা
প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৯ | আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১৪:৩০
২০২১ সালের কোপা দিয়ে লাইমলাইটে এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে বিশ্বব্যাপী নিজেকে পরিচিত করেছে টাইব্রেকারের যমদূত হিসেবে। প্রায় প্রতি ম্যাচেই টাইব্রেকারে সাক্ষাৎ যমদূত হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছেন তিনি প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের সামনে। কোপা আমেরিকার প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরের খেলোয়াড়দের জন্যও সেটি হলেন তিনি। শেষ সময়ে ইকুয়েডর গোল করে সমতায় ফিরলেও টাইব্রেকারে মার্টিনেজ বীরত্বে ৪-২ ব্যবধানে জিতলো আর্জেন্টিনা।
ম্যাচে এগিয়ে থাকলেও শেষ সময়ে ইকুয়েডর গোল করে সমতায় ফিরে খেলা। এতে ম্যাচ গড়ায় ট্রাইবেকারে। যেখানে মার্টিনেজের বীরত্বে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জিতলো আর্জেন্টিনা। একই সঙ্গে প্রথম দল হিসেবে ৪৮তম কোপার শেষ চারে আলবিসেলেস্তেরা
শুক্রবার (৫ জুলাই) টেক্সাসের হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় মাঠে গড়ায় আর্জেন্টিনা-ইকুয়েডরের শেষ আটের লড়াই। নির্ধারিত সময়ের ৯০ মিনিট ১-১ সমতায় থাকে। ইনজুরির কারণে শঙ্কা থাকলেও আর্জেন্টিনার একাদশে ফেরেন মেসি। দলে জায়গা হারান ডি মারিয়া। তবে ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলা ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্টিনেজ।
এদিনে বল দখলে আর্জেন্টিনা এগিয়ে থাকলেও গোলের সুযোগ বেশি তৈরি করে ইকুয়েডরই। তাদের একজন ভালো ফিনিশার থাকলে অন্তত দুই গোলে পিছিয়ে থাকতো আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটচের মাথায় আর্জেন্টিনার ডিফেন্সের ভুলে বল পেয়ে যান কাইসেদো। ডি-বক্সের সামান্য ভেতর থেকে নেয়া দুর্বল শট সহজেই তালুবন্দি করেন এমি মার্টিনেজ।
এর ৯ মিনিট পর আবারও গোলের সুযোগ আসে ইকুয়েডরের সামনে। কিন্তু বল নিয়ে ভেতরে ঢুকে একজন ডিফেন্ডারকে কাটালেও গোলকিপার মার্টিনেজকে পরাস্ত করতে পারেননি পায়েজ। ১৭ মিনিতে এনার ভ্যালেন্সিয়ার ক্রস থেকে প্রেসিয়েদোর দুর্বল শট গোলবারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
খেলায় প্রথম আর্জেন্টিনার প্রথম সুযোগ আসে ২৬ মিনিটে। মলিনার দারুণ ক্রস থেকে খালি জায়গায় হেড করার সুযোগ পেয়েও বল বাইরে মারেন এনজো ফার্নান্দেজ। ৩৩ মিনিটে মেসির দারুণ ডিফেন্স চেরা পাস থেকে এনজো ফার্নান্দেজ ডি-বক্সের ভেতর বল টেনে নিয়ে গেলেও তার শট ব্লক করে দেয় ইকুয়েডরের ডিফেন্ডাররা। কর্নার পায় আর্জেন্টিনা। সেই কর্নার থেকেই অবশেষে গোল পায় আর্জেন্টিনা।
মেসির করা ওই কর্নার থেকে ম্যাক অ্যালিস্টার হেড করলে বল যায় ডিফেন্ডার লিসান্দ্রো মার্টিনেজের কাছে। ভেসে আসা বলে মার্টিনেজ দারুণ হেডে বল জালে জড়ালে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় আলবিসেলেস্তারা।
ম্যাচের ৪৩ মিনিটে বাঁ-পাশ থেকে আক্রমণে এনজো ফার্নান্দেজ দারুণ বল ক্রস করলেও তাতে পা ছোঁয়াতে পারেনি আর্জেন্টিনার কেউ। ম্যাচে আর কোনো গোল না হলে প্রথমার্ধে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে ৫৪ মিনিটে এমি মার্টিনেজের কিক থেকে বল ডি বক্সের ভেতর বল পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন লাওতারো।
এরপর ৫৯ মিনিটে কর্নার থেকে ডি বিক্সের ভেতর হেড দিতে গিয়ে রড্রিগো ডি পলের হাতে বল লাগলে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেয়ার সুযোগ থাকলেও স্পট কিক থেকে বল গোলবারে মারেন তিনি। সমতায় ফিরতে ব্যর্থ হলো ইকুয়েডর। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে প্রথম গোলমুখে শট নেন লিওনেল মেসিম তার ডান পায়ের শট সোজা গোলরক্ষক বরাবর গেলে সেটি তিনি ভালোভাবেই রুখে দেন।
ম্যাচে যখন আর্জেন্টিনা জয়ের সুবাস পাচ্ছে তখনই ম্যাচের ৯২ মিনিটে ইকুয়েডরের কেভিন রড্রিগেজ গোল করে ইকুয়েডরকে সমতায় ফেরান। কোপায় কোন অতিরিক্ত সময়ের নিয়ম না থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম পেনাল্টি মিস করেন মেসি। কিন্তু এমি মার্টিনেজ টানা দুটি পেনাল্টি রুখে দিয়ে আর্জেন্টিনাকে ম্যাচে ফেরান। শেষ পেনাল্টিতে নিকোলাস ওটামেন্ডি আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করে দলকে সেমিফাইনালে তোলেন।
(ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/এনবিডব্লিউ)