জনসংখ্যা দিবস ও তরুণ প্রজন্মের ভাবনা
প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৬
সাফা আক্তার নোলক
জনসংখ্যা- যা সারা বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের একটি মৌলিক উপাদান। এই ধারণাটি কখনো একটি রাষ্ট্রের সম্পদ আবার কখনো একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নের অন্তরায় যদি না এই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করা যায়।
তবে জনসংখ্যা কেবল সমস্যা নয় বরং একটি রাষ্ট্রের ভিত্তিপ্রস্তর। এই ধারণাটিকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর ১১ই জুলাই তারিখে পালিত হয় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস, যার লক্ষ্য বিশ্ব জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের ওপরে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
১৯৯০ সালের ১১ই জুলাই প্রথমবারের মতো ৯০টি দেশে পালিত হয় এই দিবসটি। এরই ধারাবাহিকতায় পরিবার পরিকল্পনা, লিঙ্গসমতা, দারিদ্র্য, মাতৃস্বাস্থ্য এবং মানবাধিকারের মতো জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রতিবছর বাংলাদেশে ও পালন করা হয় এই দিবসটি।
আর এই দিবসটিকে ঘিরে তরুণ প্রজন্মের ভাবনাও একেক রকম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত কিছু শিক্ষার্থী এই জনসংখ্যা দিবস ঘিরে নানারকম ভাবনা ও মতামত তুলে ধরেছেন।
জনসংখ্যার অপার সম্ভাবনা নিশ্চিত হোক রাষ্ট্রের সর্বাত্মক উন্নতিতে
মো. সাজ্জাদ হোসেন
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের জনসংখ্যা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে এই জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমেই একটি দেশের সর্বাত্মক উন্নতি সম্ভব। তবে এর জন্য প্রয়োজন এই জনগোষ্ঠীর উন্নত জীবনমানের জন্য যে পরিমাণ সুযোগ সুবিধা দরকার সেগুলো নিশ্চিত করা। স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহণ, বিনোদন এসকল ক্ষেত্রে ধনী অর্থাৎ উচ্চ শ্রেণির মানুষেরা সুবিধা ভোগ করতে পারলেও নিম্ন আয়ের মানুষেরা এ ক্ষেত্রে বেশ অবহেলিত। যেকোনো সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য উক্ত ক্ষেত্রগুলোকে আরও অনেক বেশি শক্তিশালী করা উচিত। এছাড়াও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সুষম খাদ্য তালিকা অনুসরণে হিমসিম খাচ্ছেন উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো, সেখানে নিম্নবিত্তরা তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করতেও ব্যর্থ। তাই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা এবং দেশের সমস্ত জনসংখ্যার সুষম খাদ্য নিশ্চিতকরণসহ, সকল ক্ষেত্রে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে তাদের নিজ নিজ আগ্রহ অনুযায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব।
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ও নারীর ক্ষমতায়ন
নুসরাত জাহান রূপা
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ
প্রতি বছর ১১ই জুলাই পরিবার পরিকল্পনা, দারিদ্র্য, লিঙ্গসমতা, মাতৃস্বাস্থ্য এবং মানবাধিকারের মতো জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে বিশ্ব জনসংখ্যা পালিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশে ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর প্রাথমিক ফলাফল অনুসারে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন, নারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন। জনশুমারিতে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পুরুষের তুলনায় নারী সংখ্যা অধিক পাওয়া গিয়েছে। জনসংখ্যার এই বিরাট অংশের অর্থাৎ নারীদের জন্য বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠেছে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর তথ্যসূত্র মতে, বিশ্বে প্রতি মিনিটে ২৫০টি শিশু জন্মগ্রহণ করে। এর মধ্যে বাংলাদেশে প্রতি মিনিটে জন্মগ্রহণ করে ৯টি শিশু। নারীশিক্ষার প্রসার ঘটলে বাল্যবিবাহ রোধ হবে, নারীরা নিজেদের স্বাস্থ্য ও প্রজনন অধিকার সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানলাভ করবেন যার ফলে নিশ্চিত হতে পারে জনসংখ্যা সমস্যার প্রতি যথাযথ সচেতনতা। নারীরা শিক্ষিত হলে তাদের কর্মসংস্থান হবে এবং দেশের একটি বিরাট জনগোষ্ঠী জনসম্পদে পরিণত হবে। এক্ষেত্রে নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সকল ক্ষেত্রে তাদের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তবেই জনসংখ্যা সমস্যাটিকে পূর্ণাঙ্গ জনশক্তিতে রূপান্তর সম্ভব।
জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে
রিপন আল মামুন
শিক্ষার্থী, মনোবিজ্ঞান বিভাগ
একটি দেশ কতটা উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে সেটা নির্ভর করে সে দেশ জনসংখ্যাকে কতটা জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পেরেছে। এই জনসংখ্যাকেই জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে একটি দেশ উন্নয়নের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছে যেতে পারে। আর এই জনসংখ্যা কোনো দেশের জন্য সম্পদ আবার কোনো দেশের জন্য বোঝা। প্রযুক্তি ও উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এই জনসংখ্যাকে কীভাবে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা যায় সে বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রতিবছর ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন করা হয়ে থাকে। ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির পরিচালনা পর্ষদের মাধ্যমে এই দিনটি প্রথম প্রবর্তিত হয়। দিনটির মূল উদ্দেশ্য হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং এ সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যার উপর গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা। দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলি যেমন খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, সেগুলি সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ একটা দেশের জন্য অতিরিক্ত জনসংখ্যাকে পরিকল্পিতভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলা উচিত। বহির্বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এই জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের কোনো বিকল্প নেই। আর এজন্য আমাদেরকে জনসংখ্যা সংক্রান্ত নীতিমালা ও কর্মসূচি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা ও কার্যক্রম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
জনসংখ্যা নীতি ও কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে
মো. আবু বকর সিদ্দিকী
শিক্ষার্থী, মার্কেটিং বিভাগ
প্রতি বছরের ন্যায় ১১ই জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত হয়ে আসছে । এই বছরের প্রতিপাদ্য হলো ‘পরিবর্তনশীল বিশ্বে জনসংখ্যা টেকসই উন্নয়নের দিকে অগ্রসর’। বাংলাদেশ, বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ; বর্তমানে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। প্রজনন হার অনেক কমেছে, শিশু মৃত্যুহারও অনেক কমেছে। তবে, টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার: ১.৩৫% (২০২২), জনসংখ্যা ঘনত্ব: ১১৬৩ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২০২২), প্রজনন হার: ১.৯ জন প্রতি স্ত্রী (২০২২), শিশু মৃত্যুহার: ৫.৮ জন প্রতি ১০০০ জীবিত জন্ম (২০২২)। এর মধ্য অর্জিত সাফল্য গুলো হচ্ছে: প্রজনন হার হ্রাস পেয়ে ১৯৭০ সালে ৬.০ জন প্রতি স্ত্রী থেকে ২০২২ সালে ১.৯ জন প্রতি স্ত্রীতে নেমে এসেছে। শিশু মৃত্যুহার হ্রাস পেয়ে ১৯৭০ সালে ১৪৬ জন প্রতি ১০০০ জীবিত জন্ম থেকে ২০২২ সালে ৫.৮ জন প্রতি ১০০০ জীবিত জন্মে নেমে এসেছে। সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে। শিশু টিকা কর্মসূচি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মাতৃ স্বাস্থ্যসেবা উন্নত হয়েছে। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে হলে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ গুলোকে মোকাবিলা করতে হবে। যেমন ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের চাপ, দরিদ্র্যতা দূর করা, দক্ষ মানবসম্পদের মাধ্যমে বেকারত্বের লাগাম টানা, পরিবেশ সচেতনতার মাধ্যমে এর পরিচর্যা নিশ্চিত করা এবং নারীর ক্ষমতায়নের কাজ করা।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই উন্নয়ন অর্জনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে, দেশের তরুণ জনসংখ্যা, ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং সরকারের প্রতিশ্রুতি এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সহায়তা করবে। 'বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২৪' আমাদের সকলকে সচেতন করে তুলতে এবং টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে জনসংখ্যা নীতি ও কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখুক।
জনসচেতনতা তৈরি হোক জনসংখ্যা দিবসের মূল লক্ষ্য
ফারজানা ইয়াসমিন মিমি
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ
১১ই জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। জনসংখ্যা সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যকে লক্ষ্য রেখে এ দিবসটি ১৯৯০ সাল থেকে জাতিসংঘ ও সদস্যদেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্যাপন করে আসছে। জনসংখ্যা দেশের জন্য আশীর্বাদ ও অভিশাপ দুটোই হতে পারে। আমাদের দেশে বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় সতের কোটি। এই বিশাল সংখ্যক জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে পারলেই আমাদের দেশের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে। এছাড়াও আমাদের দেশে পরিবার পরিকল্পনা, মাতৃস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে জনসচেতনতা অনেক কম। এই বিষয়গুলোতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি খুবই জরুরি। তাছাড়াও আমাদের দেশের মানুষদের মধ্যে কাম্য জনসংখ্যার গুরুত্ব নিয়ে খুব কমই জনসচেতনতা দেখা যায়। কাম্য জনসংখ্যা একটি রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনসংখ্যা দিবসকে সামনে রেখে আমাদের দেশের জনগণের মধ্যে কাম্য জনসংখ্যা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে ও জনসংখ্যা সমস্যাটিকে আশীর্বাদে পরিবর্তন করে দেশের সর্বোচ্চ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।
দক্ষ মানুষ তৈরি করি, জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করি
ওমর ফারুক শ্রাবণ
শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ
জনসংখ্যা একটা দেশের জন্য আশীর্বাদ ও অভিশাপ দুটোই হতে পারে। সেটা নির্ভর করছে সেই দেশ তার জনসংখ্যাকে কীভাবে লালন করছে। জনসংখ্যা যখন দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, প্রযুক্তিক্ষেত্রে ও সামাজিকক্ষেত্রে কল্যাণ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনে তখন সেই জনসংখ্যা আশীর্বাদপুষ্ট হয়। অন্যদিকে, দেশের সম্পদ ও কর্মক্ষেত্রের তুলনায় যখন বেকার জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তখন একটা দেশের জন্য জনসংখ্যা অভিশাপ হয়ে যায়। জনসংখ্যা সংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রতি বছর ১১ই জুলাই ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৯০ সালের ১১ই জুলাই প্রথমবারের মতো ৯০টি দেশে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উদ্যাপিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রতি বছর বাংলাদেশও বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন করে আসছে। বাংলাদেশে জনসংখ্যা কমানোর লক্ষ্য পরিবার পরিকল্পনার উপর যেভাবে পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তেমনিভাবে দক্ষ, শিক্ষিত, নৈতিকতা ও মূল্যবোধসম্পূর্ণ নাগরিক গড়ে তোলা হচ্ছে না। জনগণকে দক্ষ ও শিক্ষিত করে তুলতে পারলে জনসংখ্যাই আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়াবে। শিক্ষিত ও দক্ষ প্রজন্ম তাদের পরের প্রজন্মকে দেশের সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। তাছাড়া, শিক্ষিত জনগোষ্ঠীই পারে একটা দেশকে সঠিক কাঠামো দিতে। তাই এইবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হোক, ‘দক্ষ মানুষ তৈরি করি, জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করি’।
জনসংখ্যা সমস্যা পরিবর্তিত হোক জনসম্পদে
শাহরিয়ার ইমন
শিক্ষার্থী, মার্কেটিং বিভাগ
বাংলাদেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সীমিত সম্পদের দেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা দারিদ্র্য, খাদ্য ঘাটতি, পরিবেশগত ঝুঁকি, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার উপর চাপ সৃষ্টি করছে।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি, শিক্ষার প্রসার, মা ও শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়ন, বাল্যবিবাহ রোধ, স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করা, পুষ্টির জোগান নিশ্চিত করা, তথ্যপ্রবাহ বৃদ্ধি এবং মিড-ডে মিল প্রদানের মতো পদক্ষেপগুলি গুরুত্বপূর্ণ। সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারবো। জনসংখ্যা সমস্যাটিকে কেবল সমস্যা হিসেবে ফেলে রাখলেই চলবে না বরং এটিকে ইতিবাচক দিকে পরিচালিত করতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে।
আর এই ক্ষেত্রে প্রয়োজন জনসংখ্যার যথার্থ সমন্বয়।
৮০০ কোটির পরিবার: অনন্ত সম্ভাবনা
মুহাম্মদ মাহামুদুল হাসান
শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ
মনুষ্য পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যই তাদের নিজস্ব বুদ্ধি, বৈচিত্র্য এবং অস্তিত্বের দ্বারা আমাদের বৈশ্বিক ঐতিহ্যকে করেছে সমৃদ্ধ। তবে বর্তমান সময়ে বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক, অভ্যন্তরীণ-আন্তর্জাতিক, মানবসৃষ্ট-প্রাকৃতিক কারণে এই পরিবার জর্জরিত এবং সমস্ত মানবজাতির অস্তিত্ব হয়েছে হুমকির সম্মুখীন। কিন্তু এ কথা ভুলে গেলেও চলবে না যে, দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি ব্যক্তিই একটি করে উজ্জ্বল আশার প্রদীপ। সম্ভাবনাময় এই বিশাল জনগোষ্ঠী আমাদেরকে অপার আশা দেখায় বৈশ্বিক উষ্ণতা, জলবায়ু বিপর্যয়, জাত-লিঙ্গ-বর্ণের বৈষম্য, শোষণ, সন্ত্রাসী আগ্রাসন এবং গণস্বাস্থ্য ঝুঁকির মতো জটিল সমস্যা সমাধানের। একটি সুন্দর ভবিষ্যতের উদ্দেশ্যে এই মহা ও বিশাল পরিবার নিজেদের স্বার্থে, নিজেদের বাসস্থান গ্রহের স্বার্থে একতাবদ্ধ হয়ে মানবসম্পদে পরিস্ফুটিত হওয়ার মাধ্যমে টেকসই ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে; জনসংখ্যা দিবসে- এই আমার প্রত্যাশা।
[গ্রন্থনা: সাফা আক্তার নোলক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফিচার, কলাম অ্যান্ড কনটেন্ট রাইটার্সের সাংগঠনিক সম্পাদক]