মার্কিন চাপ প্রত্যাখ্যান, রাশিয়া-চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ঘোষণা পেজেশকিয়ানের
প্রকাশ | ১৩ জুলাই ২০২৪, ১২:০৯ | আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৪
ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উপলব্ধি করা উচিত, তার দেশ কোনো চাপে সাড়া দেবে না। একই সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। খবর রয়টার্সের।
শনিবার তেহরান টাইমস-এ প্রকাশিত ‘নতুন বিশ্বের আমার বার্তা’ শিরোনামে এক বিবৃতিতে মধ্যপন্থি এই নেতা তার কট্টরপন্থি পূর্বসূরিদের মতবাদ পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে... বাস্তবতা স্বীকার করতে হবে এবং বুঝতে হবে, একবার এবং সব সময়, ইরান চাপে সাড়া দেয় না (এবং) ইরানের প্রতিরক্ষা মতবাদে পারমাণবিক অস্ত্র অন্তর্ভুক্ত নয় এবং ভবিষ্যতেও করবে না।’
চলতি মাসে ইরানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির ঘনিষ্ঠ ও কট্টর রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত সাঈদ জালিলিকে পরাজিত করেন ৬৯ বছর বয়সি হার্ট সার্জন ও সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত মাসুদ পেজেশকিয়ান। যিনি তার নির্বাচনি প্রচারণায় একটি বাস্তবসম্মত বৈদেশিক নীতি উন্নীত করার, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে স্থবির আলোচনার শুরু ও উত্তেজনা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে বেশিরভাগ ইরানি তার প্রচারাভিযানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করার ক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান, কারণ সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি দেশটির যেকোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
বিবৃতিতে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘চীন এবং রাশিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সময়ে ধারাবাহিকভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা এই বন্ধুত্বকে গভীরভাবে মূল্যায়ন করি। রাশিয়া ইরানের একটি মূল্যবান কৌশলগত মিত্র এবং আমার প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা সম্প্রসারণ এবং বাড়ানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে।’ একই সঙ্গে তেহরান সক্রিয়ভাবে ইউক্রেনের সংঘাতের অবসানের লক্ষ্যে উদ্যোগকে সমর্থন করবে বলেও জানান তিনি।
প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘ইরানি জনগণ আমাকে একটি শক্তিশালী দায়িত্ব অর্পণ করেছে যাতে আমাদের অধিকার, আমাদের মর্যাদা এবং অঞ্চল ও বিশ্বে আমাদের প্রাপ্য মর্জাদা আদায়ের জন্য। আমি এই ঐতিহাসিক প্রচেষ্টায় আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে ইচ্ছুকদের আমন্ত্রণ জানাই।’
প্রসঙ্গত, হার্ট সার্জারিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মাসুদ পেজেশকিয়ানের জন্ম ১৯৫৪ সালে। তাবরিজ অঞ্চল থেকে ৫ বার নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ইরানের দশম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।
গত মে মাসে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যু হলে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করা হয় দেশটিতে।
গত ২৮ জুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে ছয়জনকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিল ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয়নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনির নেতৃত্বে গঠিত কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে দুই কট্টরপন্থি প্রার্থী নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। ফলে প্রথম দফার নির্বাচনে লড়াই চলে চারজনের মধ্যে। কিন্তু কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় গড়ায় নির্বাচন। ৫ জুলাইয়ের এই নির্বাচনে ২৮ লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে কট্টর রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত সাঈদ জালিলিকে হারিয়েছেন পেজেশকিয়ান।
(ঢাকাটাইমস/১৩জুলাই/এমআর)