দুর্নীতি বন্ধ করতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকা জরুরি

আমরা ধারণা করেছিলাম বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দুর্নীতির বিষয়টি কমে আসবে। সেটা দেশবাসীও সমর্থন করেছিলো। বেতন বৃদ্ধিসহ নানা সুযোগ সুবিধা বাড়াতে দুর্নীতি কমার কথা ছিলো। কিন্তু তা সত্ত্বেও দুর্নীতি কমেনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও এই বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। দুর্নীতি বন্ধ করতে শুধু বেতন ভাতা বৃদ্ধিই নয় বরং আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকা জরুরি।
সরকারি দলের অনেকেই সংসদে দুর্নীতি বিষয়ে কথা বলেছেন। দুর্নীতিবাজদের বিচার চেয়েছেন। একই সংসদে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বলা হলো আবার সেই সংসদে কর দেওয়ার নাম করে কালো টাকা সাদা করার বৈধতা দেয়া হলো। এতে বোঝা যায়, দুর্নীতি এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেছে। এটা সরকারের স্বীকার করা উচিত।
সরকার বেতন ভাতা বৃদ্ধিসহ নানা সুযোগ সুবিধা প্রদান করলেও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের মূল হাতিয়ার বা যথাযথ আইন প্রণয়ন হতে এখনো দেখা যায়নি। বরং সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে দুর্নীতির হারকেক বাড়ানো হয়েছে।
দুর্নীতির বিষয়ে বর্তমানে ক্ষমতাসীনরা বিরোধী দল বা সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করেন। বর্তমানে যারা ক্ষমতার বাইরে তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারাও একই কাজ করছে। এটা আমাদের রাজনৈতিক চর্চার একটি অংশ হয়ে গেছে।
শুধু বিরোধী দল বা মানুষ যে দুর্নীতির কথা বলছে তা কিন্তু নয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার নিজেও বিব্রত। ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধিরাও ব্রিবত। ব্রিবত হওয়ার কারণে অনেকে বিভ্রান্তমূলক বক্তব্যও দিতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে দূর্র্নীতি নিয়ে অনেক সংসদ সদস্য কথা বলেছেন।
ক্ষমতার কাছাকাছি অবস্থান করা ব্যক্তিরাই দেশের বাহিরে অর্থপাচারের সঙ্গে বেশি সংযুক্ত। যারা দুর্নীতির পদ প্রদর্শক তারাই রাষ্ট্রের কাঠামোর কাছাকাছি আছেন। অর্থ ফেরতের টাকা দেশে আনার বিষয় নির্ভর করে সরকারের সদিচ্ছার উপরে। এটা শুধু আজকের সরকারের জন্য প্রযোজ্য নয় বরং যে সরকার যখনই ক্ষমতায় ছিল তারা সমানভাবে একই কাজ করেছেন। এটার অভ্যাসের ফলে বর্তমানে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে তারাই বুঝতে পারছেন না তাদের করণীয় কী?
ইফতেখারুজ্জামান: নির্বাহী পরিচালক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)

মন্তব্য করুন