প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে খুলনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০২৪, ২৩:৪৭

খুলনা ব্যুরো, ঢাকা টাইমস

মিথ্যা মামলা দায়ের ও প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শেখ জাফরিন হাসান।

খুলনা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য জাফরিন হাসান বলেন, আমার বিরুদ্ধে খানজাহান আলী থানায় একটি মামলা করা হয়। এই মামলায় ২১শে জুন  আমাকে ডেকে এনে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলাটির কারণে আমি সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছি। এই মামলাটি যে মিথ্যা তার লিখিত প্রমাণসহ প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে দেশবাসি ও প্রধানমন্ত্রী প্রসাশনিক ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের জানাতে চাই।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে মহিলা মামলা করেছে তার নাম সাদিয়া সুলতানা ইতি। এই মহিলা মাদককারবারি চক্রের সঙ্গে জড়িত। এই মহিলা ইতিপূর্বে ৩টি বিয়ে করেছেন। প্রথম স্বামীর নাম শাওন। এই ঘরে তার ৫  বছর বয়সী ছেলে সন্তান রয়েছে। এই স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাকে ডিভোর্স দেয়। এভাবে দ্বিতীয় স্বামী রেজওয়ান ও তৃতীয় স্বামী মাহফুজের কাছ থেকে একইভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়ে ডির্ভোস দেয়। এটাই এর পেশা। এসব অবৈধ উপার্জনের টাকায় এই মহিলা তার বাবার জমিতে (ফুলবাড়িগেটে) পাঁচ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে একটি বাড়ি তৈরি করছে। কে.ডি.এ এর থেকে প্লান পাস না নিয়ে এবং নিয়ম না মেনে তিনি প্রতিবেশী কালামের ঘরের সঙ্গে দেয়াল মিশিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করছে। কালাম কে.ডি.এ এর কাছে অভিযোগ করলে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কে.ডি.এর অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য কালামকে হুমকি দেয়। এরপর কালাম আমার আত্মীয় হওয়ার সুবাদে আমাকে জানায়। আমি গত ৩ জুন স্থানীয়  মুরুব্বীদের সঙ্গে নিয়ে কালামদের বাড়িতে তার পরিবারকে ডাকায়। তাদের বলা হয় ওদের হুমকি দিও না। কে.ডি.এর নিয়ম অনুযায়ী বাড়িটি নির্মান করো। তখন ইতি আমাকে বলে আমি কাজ করছি, করব। তুই আমাকে চিনিস। আমি চাইলে তোর নামে একাধিক মামলা দিতে পারি বা তোকে মার্ডার করিয়েও দিতে পারি। তুই আমার বিচার করতে আইছিস। তখন আমি কালামকে বলি গত ৮ই জুন   বিকাল ৫টায় এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের শালিসে ডাকেন। সেখানে আমিও থাকব। এরপর আমার মুঠোফোনে ফোন দিয়ে বলে আমি কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী টিপু ইতি আমার লোক ওর বিরুদ্ধে বিচার করতে গেলে মারা পড়ে যাবি। এরপর আমার মুঠোফোনে হুমকি দিয়ে বলে, আমি পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির খুলনা বিভাগীয় প্রধান নেতা নাসিম ইতি আমার লোক। ওর বিষয়ে শালিস করতে যাস না, তাহলে বিপদে পড়ে যাবি। এরপর আমার মুঠোফোনে আবার ফোন করে হুমকি দিয়ে বলে আমি মাহফুজ বাগেরহাট বাড়ি। তোদের বাপ খানজাহান আলী থানার ওসি আমার লোক। ওসিকে দিয়ে কিছু মামলা দিয়ে দিবানী। যদি ইতির বিষয়ে শালিস করতে যাস। পাশাপাশি  আমি ৫ই জুন   খানজাহান আলী থানায় এই বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করতে যাই। কিন্তু ওসি হাফিজুর রহমান আমার জিডি নেননি। আমি ওসিকে বলি জিডি না নিলে যদি আমি মারা যাই তাহলে আপনি ওদের সঙ্গে দায়ী থাকবেন। এরপর আমি পুলিশ কমিশনারকে মুঠোফোনে অভিযোগ করেও কোন ফল পেইনি। এরপর গত ৬ জুন  ইতি আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা জিডি করে। ওসি জিডি গ্রহণ করে। এর দুদিন পর  আমরা খানজাহান আলী থানায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আনিচুর রহমানের উপস্থিতিতে শালিস করি। শালিসে ওই মেয়েকে কে.ডি.এ এর নিয়ম অনুযায়ী বাড়ি নিমার্ণ করার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এরপর ঐ মেয়ের দায়ের করা জিডি ২০জুন,  মিথ্যা প্রমানিত হওয়ায় মহামান্য আদালত জিডি খারিজ করে দেয়। ওই দিন রাতে ওসির সঙ্গে যোগসাজসে আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করে। মামলায় ঘটনা দেখায়  ৭ই জুন আমরা যে শালিস করেছি তার আগের দিন রাতে। তাহলে আমি তার পরের দিন বিকালে তার বাড়ির সামনে গণ্যমান্য মানুষের উপস্থিতিতে কীভাবে শালিস করলাম। তখন তো ওই মহিলা বা তার পরিবার শালিশদারদের কাছে কিছুই বলেনি। মামলার তারিখ অনুযায়ী ৭ জুন  রাত ১১টা পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান জামাল ভাইয়ের অফিসে আমি উপস্থিত ছিলাম। আমাকে মহামান্য আদালত ৯ জুলাই  তারিখে জামিন  দেয় ও তদন্তকারী কর্মকর্তা অয়নকে শোকজ করে।

এ সময় তিনি বলেন, আপনাদের কাছে অনুরোধ এই সাদিয়া সুলতানা র‍্যাকেটের যে সকল পুলিশ, কাউন্সিলার, রাজনৈতিক নেতা ও সন্ত্রাসী আছে তাদের অনুসন্ধান করে আইনের আওতায়  আনা হোক।

আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রসাশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাচ্ছি আমি জীবনের  নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাকে হত্যা করলে কাউন্সিলার গোলাম রব্বানী টিপু খানজাহান আলী থানার ওসি হাফিজুর রহমান, চরম পন্থীনেতা নাছিম ও সাদিয়া সুলতানা ইতিসহ আরও অজ্ঞাত নামা ১০/১৫ জন আসামি হিসেবে গণ্য হবে।

ওসি যেহেতু এই চরমপন্থিদের পক্ষে কাজ করছে সেহেতু ওসির ইন্ধনে আমাকে যেকোন সময় হত্যা করতে পারে। 

 (ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/পিএস)