স্বেচ্ছায় অবসরে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর
প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০২৪, ১৪:২১
স্বেচ্ছায় অবসর গেলেন ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মকিমা বেগম সাক্ষরিত করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মো. মতিউর রহমান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ-এ সংযুক্ত এর চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তার আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা-৪৪(১) ও ধারা-৫১ অনুযায়ী আগামী ২৯ আগস্ট ২০২৪ তারিখে সরকারি চাকরি হতে অবসর (ঐচ্ছিক) প্রদান করা হলো। তবে তিনি অবসরজনিত আর্থিক সুবিধা অবসর উত্তর ছুটি, লাম্পগ্র্যান্ট এবং পেনশন পাবেন না।
চলতি বছর ঈদুল আজহায় মুশফিকুর রহমান নামে এক তরুণ রাজধানীতে সাদিক অ্যাগ্রো নামের একটি খামার থেকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কেনার জন্য বায়না করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন সেই তরুণের বাবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সদ্য মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিবলীর ঘরের ছেলে। এতেই বিপত্তি বাঁধে মতিউর রহমানের সংসার থেকে দীর্ঘ চাকরি জীবনের পড়ন্ত বেলার ক্যারিয়ারে। বেরিয়ে আসে মতিউরের দুই স্ত্রী ও সন্তানদের বিলাসী জীবনের গল্প।
গণমাধ্যমে উঠে আসে দুর্নীতির মাধ্যমে নামে-বেনামে অর্জিত হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদের ফিরিস্তি। ছেলের সম্পর্ক অস্বীকার করেও রেহাই মেলেনি তাতে। পরিচিত ও ঘনিষ্ঠজনদের বক্তব্য, সরকারি বিভিন্ন নথিপত্র স্পষ্ট করে দেয় মুশফিকুর রহমান ইফাত মতিউরেরই ছেলে। যতদূর জানা যায়, প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের পরামর্শে ছেলের সম্পর্ক অস্বীকার করেন মতিউর। তারা ধারণা করেন, এর মাধ্যমে তারা তাদের অবৈধ সম্পদের বিশাল সাম্রাজ্য আড়ালে রাখতে পারবেন। কিন্তু তা হয়নি। একের পর এক বেরিয়ে এসেছে মতিউর রহমানের দুর্নীতির সব খবর। স্ত্রী লায়লা কানিজও কলেজ শিক্ষক থেকে কীভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। সে খবরও আড়ালে থাকেনি।
আড়ালে থাকেনি রাজধানীতে তাদের দুই ডজনের বেশি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, কানাডায় মেয়ে ফারজানা রহমান ইপসিতার কোটি টাকার বাড়ি, দামি গাড়ি, শেয়ার বাজারে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ, ঢাকা, গাজীপুর ও নরসিংদীতে কোটি কোটি টাকা মূল্যের জমি, পার্ক-রিসোর্টসহ আলিশান বাড়ির কোনো তথ্যই।
এদিকে থলের বিড়াল বের হতেই লাপাত্তা এনবিআরের সদস্য পদমর্যাদার সদ্য সাবেক এই কর্মকতা। চতুর্দিকে আলোচনা-সমালোচনা ও দুদকের অনুসন্ধান শুরু হওয়ার খবরের মধ্যেই লাপাত্তা হয়ে গেছেন মতিউর রহমান।
(ঢাকাটাইমসস/৩১জুলাই/এমআর)