কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিতে নিহত সিংগাইরের দুজনই পথচারী, দাবি পরিবারের

প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০২৪, ১৮:২২ | আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২৪, ১৮:৩৫

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতার ঘটনায় মানিকগঞ্জের সিংগাইরের নিহত দুইজনই পথচারী ছিলেন বলে দাবি করেছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। নিহতদের একজন বাসার নিচে এবং অপরজন কাজ শেষে ফেরার পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। 

নিহতরা হলেন-উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের ধল্লা খানপাড়া গ্রামের মো. বাহাদুর খানের ছেলে মো. সাদ মাহমুদ খান (১৩) ও তালেবপুর ইউনিয়নের ইসলামনগর গ্রামের শেখ বুদ্ধের মেয়ের জামাই ও কুমিল্লা জেলার বাঞ্চারামপুরের মো. সাইদুল ইসলামের ছেলে মো. তুহিন আহমেদ (২৮)।

নিহত সাদ মাহমুদের বাবা বাহাদুর খান বলেন, সাভার যাবালে নূর দাখিল মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র সাদ মাহমুদ গত ২০ জুলাই বাসার ছাদে ফুফাতো ভাই মো. হাসিবুলের (১৩) সঙ্গে খেলা করছিল। সাভার নিউ মার্কেটের দিকে হঠাৎ ধোয়া দেখতে পেয়ে কৌতূহলী হয়ে দেখতে বাসার নিচে রাস্তায় নামে তারা। এ সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় সাদ মাহমুদের উরুতে গুলি লাগলে সে ঘটনাস্থলেই পড়ে যায়। পরে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। এ মৃত্যুর জন্য পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার দাবি করেছেন তিনি।

নিহতের বোন তাসলিমা খানম নাজনীন বলেন, সাদের বয়স কম। সে এই আন্দোলনের কিছুই বুঝে না। বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে ধোঁয়া দেখে বাসার নিচে নামার পরই তাকে গুলি করে। স্থানীয়দের বরাদ দিয়ে তিনি বলেন গুলি করার পর দৌড় না দিলে আবারও গুলি করবে বলেছে পুলিশ। এসময় আরও একজনকে গুলি করা হয়েছে। তাদের সাহায্য করতে এক রিকশাচালক এগিয়ে আসলে তাকেও গুলি করে। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। 

ধল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, এরকম মৃত্যু কারোই কাম্য না। নিহত সাদ মাদরাসা ছাত্র ছিলেন। এটা আসলেই দুঃখজনক। আমি তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

অপরদিকে নিহত তুহিন আহমেদের স্বজনরা জানান, তুহিন নারায়ণগঞ্জে রাজ মিস্ত্রির কাজ করতো। গত ১৮ জুলাই বিকালে কাজ থেকে বাসায় ফেরার পথে চিটাগং রোডে ডাচ বাংলা ব্যাংকের কাছে পেটে গুলি বিদ্ধ হয় তুহিনের। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

পরে তুহিনের পরিবারের সদস্যরা তাকে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে নিয়ে আসার পর তার অবস্থার অবনতি হলে ১৯ জুলাই সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে অপারেশন শেষে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জুলাই সাড়ে ১১ টার দিকে তিনি মারা যান। 

তালেবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তুহিনের নিহত হওয়ার ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, সে ইসলামনগর গ্রামের শেখ বুদ্ধর মেয়ে জামাই। জানতে পেরেছি নারায়ণগঞ্জে কাজে গিয়ে আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত হয়েছে। তার ৩ বছর বয়সী একজন ছেলে আছে।

ঢাকাটাইমস/০২আগস্ট/পিএস