বগুড়ায় ৪ ঘণ্টা ধরে চললো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি
প্রকাশ | ০২ আগস্ট ২০২৪, ১৯:৫৬
বৃষ্টি উপেক্ষা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে বগুড়ায় গণমিছিলের পর শহরের সাতমাথায় বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সাতমাথা অবরোধ করে রেখে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেন।
এর আগে জুমার নামাজের পর বৃষ্টি উপেক্ষা করে বগুড়ায় ‘গণমিছিল’ কর্মসূচির জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সাতমাথায় জড়ো হতে থাকেন। জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা এলাকায় অবস্থান নিয়ে তাদের দাবি-দাওয়া সংবলিত বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। মুষলধারে বৃষ্টি এলেও শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান।
এরপর তারা শহরের কাজী নজরুল ইসলাম সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সাতমাথায় এসে শেষ হয়। এ সময় বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সাতমাথা এলাকা। এরপর বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বগুড়ার শেরপুর সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি শহরের মালতিনগর হয়ে জেলখানার মোড় হয়ে সার্কিট হাউজের সামনে দিয়ে আবার সাতমাথায় এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, পুলিশ নানাভাবে এখনো শিক্ষার্থীদের হয়রানি করছে। মামলা দিচ্ছে। গ্রেপ্তার করছে। মোবাইল ফোন চেক করছে। রাতের বেলা বিভিন্ন বাসায় অভিযান চালিয়ে শিক্ষার্থীদের অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে। এসব বন্ধ করা জরুরি।
তারা আরও বলেন, আমাদের ন্যায্য আন্দোলন করতে গিয়ে দেশে শত শত ভাই বোন মারা গেছেন। এসব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। সব মিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব দাবি মেনে না নিলে আমাদের আন্দোলন চলবে।
আজকের কর্মসূচিতে অন্যান্য দিনের চেয়ে অনেক বেশি অভিভাবককে সমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে। তারাও শিক্ষার্থীদের দাবিকে সমর্থন করে বৃষ্টির মধ্যেই রাস্তায় নেমে এসেছেন।
কয়েকজন অভিভাবক জানান, এই দাবি এখন আর শুধু শিক্ষার্থীদের মাঝে নেই। এটি এখন সাধারণ মানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। এই মুহূর্তে সব শ্রেণি পেশার মানুষের উচিত রাস্তায় নেমে আসা। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিতে সমর্থন করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সহায়তা করা।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, আমরা আর কোনো সংঘাত চাই না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেওয়া দাবিগুলো মেনে নিলে দেশে শান্তির পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমরা সবাই শান্তি চাই।
কর্মসূচিতে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ, সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, বগুড়া জিলা স্কুল, বগুড়া সরকারি কলেজ, বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্কুল এন্ড কলেজ, বগুড়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটসহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচি চলাকালে বগুড়া শহরের সাতমাথায় সব সড়ক অবরোধ করা ছিল। এ কারণে সাতমাথা হয়ে কেউ কোনোদিকে চলাচল করতে পারেনি। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় ফিরে স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।
পুরো সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সাতমাথার মুজিব মঞ্চ ও জেলা স্কুলের সামনে অবস্থান নেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছে। সেখানে তারা অবস্থান নেয়। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। শুক্রবার বন্ধের দিন হওয়ার কারণে যানবাহনের চাপ ছিল না। বিকল্প পথে যানবাহন চলাচল করে।
ঢাকাটাইমস/০২আগস্ট/পিএস